সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁরা ‘শত্রু’। ২০১৯ সালে ওয়ানড় কেন্দ্রে রাহুল গান্ধীর সাংসদ হওয়া আটকাতে প্রাণপাত করেছিলেন তাঁরাই। সেই রাহুলের (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হতেই রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে বামকর্মীরা তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। এমনকী কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন যিনি রাহুলের সমালোচক হিসাবেই পরিচিত, তিনিও কংগ্রেস নেতার পাশেই দাঁড়িয়েছেন।
রাহুল সাংসদ পদ খোয়াতেই ওয়ানড়ে পথে নেমে গিয়েছিলেন কংগ্রেস (Congress) নেতারা। রাজপথে কংগ্রেস কর্মীদের মিছিলে শামিল হতে দেখা গেল বাম কর্মীদেরও। তাঁরা বলছেন, রাজনৈতিক লড়াই থাকবেই। রাহুল পরেরবার আবার ওয়ানড়ে সাংসদ হলে আমরা বিরোধিতা করব। কিন্তু রাজনীতির লড়াইয়ের আগে গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই। বস্তুত শুধু স্থানীয় নেতারা নন। কেরল সিপিএমের শীর্ষ নেতারাও কংগ্রেস নেতার পাশেই দাঁড়িয়েছেন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan) বলছেন,”জোর করে বিরোধীদের দমন করাটা ফ্যাসিস্ট মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। এটা সংঘ পরিবারের আরও একটা আক্রমণ গণতন্ত্রের উপর।”
সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechury) বরাবরই রাহুলের সঙ্গে সখ্য রেখে চলেন। এদিনও তিনি টুইট করে বললেন, বিজেপি এখন বিরোধী শিবিরের নেতাদের টার্গেট করতে অপরাধমূলক মানহানির পথ বেছে নিয়েছে। এটি বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি অথবা সিবিআই-এর চরম অপব্যবহারেরও উপরে আসে। এই ধরনের স্বৈরাচারী হামলাকে প্রতিহত এবং পরাজিত করুন।” বস্তুত রাহুলের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কোথাও গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরির মুখে একসুর শোনা গিয়েছে।
এসবের মধ্যে অবশ্য সরকার রাহুলের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, সাংসদ পদ বাতিল করার পর এবার তাঁর তুঘলক রোডের বাড়িটিও ফাঁকা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। রাহুল যে আর সাংসদ নন, সেটা লোকসভার সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলে হয়েছে। এক্ষেত্রে রাহুল উচ্চ আদালতে কোনও স্থগিতাদেশ জোগাড় করতে না পারলে ১ মাসের মধ্যে তাঁকে তুঘলক রোডের বাংলো ছাড়তে হতে পারে।
এদিকে কংগ্রেসও লড়াই ছাড়ছে না। সূত্রের খবর, রাহুলের সদস্যপদ বাতিলের প্রতিবাদে জনচেতনা কর্মসূচি, সংবিধান বাঁচাও কর্মসূচি নিয়ে দেশজুড়ে আন্দোলনে নামছে দল। সোমবার থেকেই পথে নামবেন কংগ্রেস নেতাকর্মীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) বলছেন, ২০১৪ থেকে মোদি সরকারের বিভিন্ন ভ্রান্ত নীতিকে কাঠগড়ায় তুলছেন রাহুল। ভ্রান্ত জিএসটি (GST), নোটবন্দি, বিদেশনীতি-সহ সব বিষয়ে উনি কেন্দ্রকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন। তাই ওঁকে থামাতেই হত। তার উপর ভারত জোড়ো (Bharat Jodo Yatra) যাত্রা দেশজুড়ে গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে, সব মিলিয়ে মোদি (Narendra Modi) অ্যান্ড কোং চূড়ান্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গিয়েছে। এটা তাঁরই প্রমাণ।” যেসব বিরোধী নেতা পাশে থেকেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলা হবে। আগামী দিনে যৌথ আন্দোলনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.