সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব করে বিছানা ভিজিয়ে ফেলেছিল শিশুকন্যা। এই অপরাধে তার গায়ে গরম হাতার ছেঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর জেরে শিশুকন্যার গোপনাঙ্গ, থাই ও পেটের অনেকখানি পুড়ে গিয়েছে। নৃশংস ঘটনটি ঘটেছে কেরালার কোল্লামে।
জানা গিয়েছে, বছর সাতেকের শিশুকন্যার বাবা একজন লরিচালক। মায়ের মৃত্যু হলে ফের বিয়ে করেন তার বাবা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে শিশুটিকে সহ্যই করতে পারত না নতুন মা। প্রথমদিকে স্বামীর অবর্তমানে চলত মারধর। ধীরে ধীরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। সৎ মাকে দেখলেই ভয়ে কুঁকড়ে যেত সে। গত সপ্তাহে একদিন ঘুমের মধ্যে বিছানা ভিজিয়ে ফেলেছিল। সকালে তা জানতে পেরে রেগে যায় সৎ মা। বিছানায় প্রস্রাবের অপরাধে তাকে গরম হাতার ছেঁকা দিয়ে দেয়। আতঙ্কে কিছুই বলতে পারেনি শিশুকন্যা। এদিকে পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থানে জ্বালাপোড়া শুরু হতেই সে কাঁদতে থাকে। ওই অবস্থাতেই স্কুলে যায়। খুদে ছাত্রীকে একরাশ অস্বস্তি নিয়ে বসে থাকতে দেখে শিক্ষিকার সন্দেহ হয়। তিনি প্রশ্ন করতে প্রথমে নিদারুণ ভয় পেয়ে মুখ খোলেনি নাবালিকা। তারপর ধীরে সবকথাই খুলে বলে। শরীরের পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থানগুলিও দেখায়। এরপরেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চাইল্ডলাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা শুনে চাইল্ডলাইনের তরফে থানায় খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ শিশুটির বাবা ও সৎ মাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির উপরে নতুন অত্যাচার হয়েছে এমন নয়। প্রায়ই তাকে মারধর করা হত। এবারের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যায়। অসুস্থতার জেরেই শিক্ষিকার নজরে বিষয়টি আসে। নাহলে অন্যান্যবারের মতো ধামাচাপা থাকলে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা যেত না। তাই দেরিতে হলেও মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়েছে। ধৃত সৎ মায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৪-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জুভেনাইল অ্যাক্টের আওতায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। নির্যাতিত শিশুটির চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.