সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি শুধু চেয়েছিলেন, ঠাকুমার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ হোক! কিন্তু, তা পূর্ণ করতে গিয়ে যে এভাবে পড়তে হবে বিতর্কের মুখে, তা বোধ হয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া!
প্রিয়াঙ্কার ঠাকুমার মৃত্যু হয়েছে ৩ জুন। মধু জ্যোৎস্না আখৌরির শেষ ইচ্ছা ছিল, কেরলের আট্টামঙ্গলম গির্জা-সংলগ্ন কবরখানায় তাঁকে সমাধিস্থ করা হোক! যেখানে তাঁর পরিবারের অন্যরাও শায়িত রয়েছেন মৃত্যুর পরে, সেখানে ঠাঁই পেতে চেয়েছিলেন তিনিও!
মৃত্যুর পরে তাই তাঁর দেহ নিয়ে প্রিয়াঙ্কা এবং পরিবারের অন্যরা পৌঁছন কোট্টায়ামে। মধু জ্যোৎস্না আখৌরির গ্রামে। এবং সেখান থেকেই দেখা দেয় সমস্যা। দেহ সমাধিস্থ করা নিয়ে আপত্তি জানায় গির্জা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, গির্জা-সংলগ্ন কবরখানায় বিধর্মীর দেহ সমাধিস্থ করা যাবে না।
অথচ তথ্য বলছে, মধু জ্যোৎস্না আখৌরি বিয়ের আগে ছিলেন খ্রিস্টান। তাঁর বিয়ের আগে নাম ছিল মেরি জন। পেশায় নার্স মেরি কর্মসূত্রে চলে আসেন বিহারে। সেখানেই তিনি বিয়ে করেন প্রিয়াঙ্কার ঠাকুর্দা ডাক্তার আখৌরিকে। তার পর, বদলে নেন নামটাও!
ঠাকুমার সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা
এই ব্যাপারটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় দেহ সমাধিস্থ করার ক্ষেত্রে। নিরূপায় হয়ে ঠাকুমার দেহ নিয়ে প্রিয়াঙ্কারা তখন পৌঁছন পরুথুমপরায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে। চলতে থাকে কথাবার্তা- কী ভাবে মধু জ্যোৎস্নার শেষ ইচ্ছা রক্ষা করা যায়!
সেই সময়েই এগিয়ে আসেন কেরলের ধর্মযাজক বিশপ থমাস মোর থেমোথিয়াস। তাঁর সম্মতিতে পোনকুন্নমের সেন্ট থমাস জ্যাকোবাইট গির্জা সংলগ্ন কবরখানায় প্রিয়াঙ্কার ঠাকুমার দেহ সমাধিস্থ করা হয়।
ঘটনাটা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই মর্মাহত ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। সারা জীবন ধরে তাঁর ঠাকুমা ছিলেন খ্রিস্টধর্মের অনুরাগী। হিন্দুকে বিয়ে করেও তিনি তাঁর ধর্মাচার ত্যাগ করেননি। তার পরেও তাঁর মৃত্যুর পরে এই ধর্মবৈষম্যের ব্যাপারটা গভীর ভাবে শোকাহত করেছে নায়িকাকে।
কিন্তু, এখানেই শেষ নয়। সেন্ট থমাস জ্যাকোবাইট গির্জার অন্য ধর্মযাজকরা এবার রুখে দাঁড়িয়েছেন ঘটনাটির বিরুদ্ধে। তাঁদের বক্তব্য, বিশপ থমাস উচিত কাজ করেননি। বিশপের নামে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে একটি বিচার কমিটি পর্যন্ত গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির রায় কী হতে পারে, তাই নিয়েই এখন চলছে জল্পনা!
বিশপ নিজে অবশ্য ঘটনায় অন্যায় কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত সাফ- মধু জ্যোৎস্না বরাবর খ্রিস্টধর্ম এবং সমাজের জন্য কাজ করে এসেছেন। অতএব, কেবল বিয়ের জন্য তাঁর শেষকৃত্যের অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনও মানে হয় না!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.