সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশ সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এই ‘অপরাধে’ স্বামী সন্দীপানন্দ গিরির ভগবত গীতা গার্লস স্কুলটির সামনেই গাড়ি পুড়িয়ে হামলার অভিযোগ। এর জেরে একটি ওমনি ও হন্ডা গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। এদিকে আগুন লাগানোর খবর টের পেয়ে প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই ভক্তদের আশ্রম স্কুলের বাইরে বের করার ব্যবস্থা করে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। শনিবার ভোররাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের রাজধানী তিরুবনন্তপুরম শহরের বাইরে। এই হামলার যাবতীয় দায় সংঘ পরিবারের উপরেই চাপিয়েছেন আশ্রম-স্কুলের প্রধান স্বামী সন্দীপানন্দ। তাঁর নিঃসন্দেহাতীত দাবি, সংঘ পরিবারের তরফেই হামলাটি হয়েছে। কেননা, সবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সমর্থন করার জন্যই এই হামলা। সেই সময় থেকেই তাঁকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে সংঘ পরিবার।
এদিকে এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন। তিনি বলেন, ‘মতাদর্শগতভাবে সমঝোতা যেখানে বাধা পায় সেখানেই এরকম হামলার ঘটনা ঘটে। তবে কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিলে তাকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। মেনে নেওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার। যাঁরা স্বামীজির কাজকর্মের বিরোধিতা করেছিল, তাঁরাই তাঁর স্কুল-আশ্রমে হামলা চালিয়েছে।’
অন্য দিকে হামলার দায় মানতে নারাজ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের দাবি, এই ঘটনার পক্ষপাতিত্বহীন তদন্ত করুক পুলিশ। রাজ্যের বিশিষ্ট পুলিশকর্তা লোকনাথ বেহারা বলেন, ‘এই ঘটনায় অভিয়োগ দায়ের হয়েছে। মূল চক্রীর সন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা ধরা পড়লে কাউকেই রেহাত করা হবে না। রাজ্যে এই ধরনের পরিস্থিতি আমরা সহ্য করব না।’
স্বামী সন্দীপানন্দকে হত্যার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কেরলের অর্থমন্ত্রী থমাস ইসাক। তিনি বলেন, ‘সংঘ পরিবার দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যে যেসব ফতোয়া চালাচ্ছে তার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন স্বামীজি। সর্বোপরি সবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যখন সংঘ পরিবার সরব হয়েছে, ঠিক সেসময়ই দেশের শীর্ষআদালতের সমর্থনে মুখ খুলেছেন স্বামী সন্দীপানন্দ। এই স্কুল-আশ্রমে স্বামীজির সঙ্গে মাত্র আর একজন থাকেন। অভিযোগ, আগুনে আশ্রমের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনের আগুন স্বামীজির নজরে আসতেই তিনি তৎক্ষণাৎ দমকলে খবর দেন। ততক্ষণে আশ্রমের সামনে থাকা হন্ডা ও ওমনি প্রায় ভস্মীভূত। দমকল তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্যই বড়রকমের বিপদ এড়ানো গিয়েছে।’
[সেনার দাপটে নাকাল উপত্যকার জঙ্গিরা, ছ’মাসের বেশি বাঁচছে না কেউ]
উল্লেখ্য, কেরলের সবরীমালা মন্দির নিয়ে ইতিমধ্যেই ঘটনার ঘনঘটা। দেবতা আইয়াপ্পার মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশে কোনও বাধা নেই। এহেন সুপ্রিমরায়ের পর থেকে কেরলে আইয়াপ্পা ভক্তদের বিরোধিতা চরমে। স্বামী সন্দীপানন্দের আশ্রম-স্কুলে হামলার ঘটনা সেই বিরোধিতার বহিঃপ্রকাশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.