সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যভিচারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আরজি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র। বুধবার সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুনানিতে রাজি হয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, কেন্দ্রের পিটিশনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক সংক্রান্ত রায় সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত নয়। সেনাবাহিনীর বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী কোনও সহকর্মীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারের জড়ালে বা অশালীন আচরণ করলে বাহিনী থেকে বরখাস্ত হতে পারেন অভিযুক্ত। কিন্তু বছর দুয়েক আগে শীর্ষ আদালতের রায়ে সেনার বিধান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তারপরই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় প্রতিরক্ষামন্ত্রক। কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলায় যুক্তি পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল ও অ্যাডিশনাল সলিসিটার জেনারেল মাধবী গড়রিয়া। তাঁদের বক্তব্য, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনার জওয়ান ও অফিসারদের অত্যন্ত দুর্গম ও বিপজ্জনক জায়গায় মোতায়েন করা হয়। সে সময় সেনার আবাসনে তাঁদের স্ত্রী ও পরিবারের দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলি। ফলে অনেকেই সেখানে যাতায়াত করেন। সেই সময় ব্যভিচার হতে পারে বলে যদি জওয়ানদের মনে আশঙ্কা থাকে তা হলে তা হলে সেটা কাজের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সশস্ত্র বাহিনীতে জওয়ানদের কথা ভেবেই ব্যভিচারকে অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হোক।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট ১৫৮ বছরের পুরনো আইনকে বাতিল করে দেয়, যেখানে বলা হয়েছিল যদি কোনও বিবাহিত ব্যক্তির সঙ্গে অন্য কারোর শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়, তবে তা বেআইনি বলে গণ্য করা হবে। সেই আইনে বলা হয়েছিল, আইপিসি-র ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য একজন পুরুষকেও শাস্তি দেওয়া যাবে না এবং একজন মহিলাকেও তাঁর স্বামীর সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা যাবে না। সমাজের সকল স্তর থেকেই এই রায়কে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তবে সেনা সমকামিতা ও ব্যভিচারকে শাস্তিযোগ্য করে রাখার পক্ষে। বাহিনীর তরফে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে বিষয়টি জানানো হয়। কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে। এদিন কেন্দ্রের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি নবীন সিনহা এবং বিচারপতি কে এম যোশেফের বেঞ্চ সেই ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠিয়েছে, যাঁর আবেদনের ভিত্তিতে এর আগে আইনটি বাতিল হয়েছিল। পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের কাছে পাঠিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.