মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: ২৯ বছর পর ফের শ্রীনগরে নিজের বাড়িতে ফিরলেন এক কাশ্মীরি পণ্ডিত। ৭৪ বছরের ওই ব্যক্তির নাম রোশন লাল মাওয়া। ১৯৯০ সালের ১৩ অক্টোবর শ্রীনগরে নিজেদের দোকানের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সে যাত্রায় যদিও প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তারপর শ্রীনগর ছেড়ে কিছুদিন জম্মুতে আশ্রয় নিয়ে সোজা চলে গিয়েছিলেন দিল্লি। বুধবার ফের নাড়ির টানে শ্রীনগরে ফেরত এসে নিজের পুরনো দোকান খুললেন এই ব্যবসায়ী।
তাঁর এভাবে ফিরে আসার ঘটনায় খুশি হয়েছেন শ্রীনগরের অনেক বাসিন্দা। তাই বুধবার যখন তিনি নিজের দোকান খুলছেন তখন তাঁকে স্বাগত হয়েছিলেন প্রায় ১০০ জনের মতো স্থানীয় ব্যবসায়ী। রোশন লালকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার পাশাপাশি তাঁকে সম্মান জানিয়ে মাথায় সাদা রঙের কাপড়ও বেঁধে দেন তাঁরা। অন্যদিকে দোকান খোলার খুশিতে তাঁদের মিষ্টি মুখ করান রোশন লাল।
এপ্রসঙ্গে রোশন লাল বলেন, “২৯ বছর আগে নিজের দোকানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম আমি। পিছন দিক থেকে চারটে গুলি করা হয়েছিল। এরপরই শ্রীনগরে ছেড়ে চলে যাই। দিল্লিতে গিয়ে ব্যবসা শুরু করি। সুন্দর বাড়িও বানাই। কিন্তু, কোনওদিন কাশ্মীরকে ভুলতে পারিনি। তাই জীবনের শেষ সময়টা এখানে কাটাব বলে ফিরে এলাম। আর এখানে এসে যেভাবে সবার ভালবাসা পেলাম তা কোনওদিন ভুলতে পারব না। কাজের প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়েছে আমাকে। কিন্তু, কাশ্মীরের মতো কোনও জায়গার সন্ধান পাইনি। আমি মনে করি কাশ্মীরের ৯৯ শতাংশ মানুষ মানবিক। শুধুমাত্র এক শতাংশের মনে অন্য ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খায়। এখানকার মুসলিম সম্প্রদায় ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক এখনও বেঁচে আছে।”
রোশন লালের ঘরে ফেরার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে একই কথা বলেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। তাঁর কথায়, “আমরা চাই রোশন লালের মতো ঘরছাড়া কাশ্মীরি পণ্ডিতরা সবাই ফিরে আসুন। কেউ কেউ অন্যরকম চিন্তা করলেও কাশ্মীরের বেশিরভাগ মানুষই একসঙ্গে থাকতে চান। আগে আমরা যেভাবে একে অপরের পাশে থাকতাম সেভাবেই থাকতে চাই।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.