সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’পায়ে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন সত্যি করা হয়তো সহজ, তবে হুইলচেয়ারে বসে? প্রতিকূলতা আসে-যায়। আর তার মাঝেও যে স্বপ্ন দেখা যায় এবং তা সত্যি কার যায়, তা প্রমাণ করলেন জাভেদ আহমেদ। দু’দশক আগের কথা। জঙ্গিদের গুলি পিঠ এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল জাভেদের। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, আর কোনও দিন উঠে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু কাশ্মীরি যুবকের মনে তখন উদ্যম। জবুথবু হুইলচেয়ারও পারেনি তাঁর ইচ্ছেডানা কাটতে। জঙ্গিদের গুলিতে নিজে পঙ্গু হয়েও প্রতিবন্ধী শিশুদের জীবনে আলো জ্বালিয়েছেন জাভেদ আহমেদ তাক। কাশ্মীরের অশান্ত পরিবেশের মাঝে এত প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে আজ তিনি সফল। তাঁর এই মানবিক উদ্যোগের জন্য ২০২০ সালের পদ্ম পুরস্কারের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়ে নিলেন।
জাভেদ আহমেদ আদতে জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগের বিজবেহারার বাসিন্দা। ‘হিউম্যানিটি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’ নামে যাঁর নিজস্ব এক সংগঠন রয়েছে। অনন্তনাগ ও পুলওয়ামার প্রায় ৪০টি গ্রামে ঘুরে ঘুরে কাজ করে জাভেদের এই সংগঠন। উপত্যকার বাসিন্দাদের কাছে তিনি এখন আল্লাহর ‘ফরিস্তা’ অর্থাৎ ভগবানের দূত। বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কারণ, দুর্ঘটনার পর তাঁর নিজের জীবন থেকেই বুঝেছেন, ওদের কষ্টের কথা। ‘জাইবা আপ্পা’ নামে একটি স্কুলও গড়েছেন জাভেদ। যেখানে প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মরক্ষার জন্য শেখানো হয় মার্শাল আর্টও।
সমাজসেবাই এখন জাভেদ আহমেদের নেশা। তাঁর বেঁচে থাকার লক্ষ্য। হুইলচেয়ারে বসেও সমাজের পাশে দাঁড়ানোয় কাশ্মীরি জাভেদকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য পদ্মশ্রী দেওয়া হতে চলেছে জাভেদকে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জীবনের আলো দেখান জাভেদ। তবে নিজের উপর ‘সমাজসেবী’ তকমা সাঁটতে নারাজ জাভেদ। কারণ, তাঁর একটাই উদ্দেশ্য, “বাধা যতই আসুক। “লক্ষ্যের পথে এগিয়ে চল। লক্ষ্যচ্যূত হলে চলবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.