সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক দিকে যখন বেলাগাম বৃষ্টিতে দেশের বাকি অংশ কার্যত জল থইথই, সেখানে প্রবল গরমে পুড়ছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর। রিপোর্ট বলছে, গত রবিবার কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় রেকর্ড ছুঁয়েছে তাপমাত্রা। কাশ্মীরের আবহাওয়া দপ্তরের দাবি, গত ২৫ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গত রবিবার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে আগামী ২ দিনের জন্য কাশ্মীরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ।
আবহাওয়া দপ্তরের দাবি অনুযায়ী, জুলাই মাসের হিসেবে কাশ্মীরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৪৬ সালের ১০ জুলাই। সেবার শ্রীনগরের তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সেই রেকর্ড না ভাঙলেও রিপোর্ট বলছে, গত ২৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে রবিবার কাশ্মীরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পাশাপাশি রবিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কাজিগুন্ডের তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ১১ জুলাই। সেবার তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৫ ডিগ্রি। কাশ্মীরের মতো জায়গায় যা লু-এর সামিল। ভূস্বর্গের তাপমাত্রার এমন ব্যাপক বৃদ্ধি ভাবাচ্ছে পরিবেশবিদদেরও।
ভারতের মতো দেশে লু-এর ঘটনা তেমন বড় কোনও বিষয় নয়। চলতি বছর গোটা উত্তর ও পূর্ব ভারতে দেরিতে বর্ষা ঢোকায় ব্যাপক তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছিল। যদিও তা শুধুমাত্র সমতলেই সমতলেই সীমাবদ্ধ ছিল। গরম থেকে বাঁচতে হিমালয়ের পাদদেশে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু পর্যটক। এবার সেখানেই দেখা যাচ্ছে গরমের প্রকোপ। ২০১৯ সালের এই রিপোর্ট বলছে, গত ৩৭ বছরে (১৯৮০-২০১৬) কাশ্মীরের গড় তাপমাত্রা ০.৮ ডিগ্রি বেড়েছে। এমনকী গত বছরেও রেকর্ড ভেঙেছিল কাশ্মীরের তাপমাত্রা।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (ICIMOD) ২০১৯ সালের একটি রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও হিন্দুকুশ হিমালয়ের উষ্ণতা কমপক্ষে ০.৩ ডিগ্রি বাড়তে পারে।’ ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কাশ্মীরের বার্ষিক তাপমাত্রা এই শতাব্দীর শেষের দিকে ৪-৭ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন অন্যদিকে শ্রীনগর এবং অন্যান্য পার্বত্য অঞ্চলে দ্রুত বসতি নির্মাণকেও দাবি করছেন আবহাওয়াবিদরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.