সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন দশক পর অবশেষে জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে নির্দেশ দিল আদালত। বৃহস্পতিবার পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণকে (ASI) এই ব্যাপারে পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে বারাণসী আদালত।
প্রায় তিন দশক আগে এক মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব কাশীর বিশ্বনাথের মন্দির ভেঙে জ্ঞানবাপী মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। এই অভিযোগ ঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখতেই পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করতে পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণকে নির্দেশ দেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক আশুতোষ তিওয়ারি। আদালতের নির্দেশ, বিশেষজ্ঞ এবং দুই ধর্মে বিশিষ্টদের নিয়ে তৈরি করতে হবে পাঁচ সদস্যের কমিটি।তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মাসখানেক আগে Places of Worship (Special Provisions) Act, 1991-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। ওই আইনটির মতে, ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সাল থেকে আরও কোনও ধর্মস্থলের স্বরূপ পরিবর্তন করা যাবে না। অর্থাৎ, ওই দিনের পর থেকে বিতর্ক থাকলে কোনও মসজিদকে ভেঙে মন্দির করা যাবে না বা কোনও মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে মামলা চলায় অযোধ্যাকে আইনটির আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, কাশী বা বারাণসীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দিরের গায়েই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ। ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, একাধিকবার বিদেশি হানাদারদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্দিরটি। ১৬৬৯ সালে মূল মন্দিরটি দখল করে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেন মোঘল বাদশাহ ঔরঙ্গজেব। এখনও মসজিদের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর ছবি দেখা যায়। অষ্টাদশ শতকে হিন্দুদের আবেগকে মান্যতা দিয়ে মসজিদের কাছেই আজকের বিশ্বনাথ মন্দিরটি তৈরি করেন মারাঠা রাজ্য মালওয়ার রানি অহল্যাবাই হোলকর। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশী বিশ্বনাথ করিডর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে বিশ্বনাথ মন্দির থেকে গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। ফলে জ্ঞানবাপী মসজিদের আশপাশের বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। মসজিদের কেয়ারটেকার সাইদ ইয়াসিন ‘The Wire’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলন যে চারপাশ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় জমায়েতের আশঙ্কা বেড়েছে। বাবরি ধংসের আগেও এভাবেই বিতর্কিত কাঠামোটির চারপাশ খালি করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.