সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশী বিশ্বনাথ মন্দির (Kashi Vishwanath) না জ্ঞানবাপী মসজিদ? এ নিয়ে জলঘোলা অব্যাহত। তবে তার মাঝেই সম্প্রীতির সাক্ষী রইল দেশবাসী। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডর তৈরির জন্য ১৭০০ বর্গফুট জমি দিলেন মুসলিমরা। জ্ঞানবাপী মসজিদের লাগোয়া অংশ চলে গেল কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের ট্রাস্টের আওতায়। মুসলিম ‘বন্ধু’দের পালটা সৌজন্য দেখালেন হিন্দুরাও। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মসজিদের কাছেই এক হাজার বর্গফুট জমি দান করল তারা।
এদিন অঞ্জুমান ইন্তাজামিয়া মসজিদের যুগ্মসচিব এসএম ইয়াসিন বলেন, “গোটা বিষয়টা নিয়ে এখনও আদালতে মামলা চলছে। তবে কেন্দ্র করিডর বানাতে তৎপর। জমি অধিগ্রহণও করা হচ্ছে এর জন্য। তাই আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের করিডরের জন্য ১৭০০ বর্গফুট জমি দেওয়া হবে।” পালটা হিসেবে মন্দির কর্তৃপক্ষও দুই ধর্মীয় স্থানের কাছে এক হাজার বর্গফুটের জমি দান করে।
উল্লেখ্য, কাশী বা বারাণসীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দিরের গায়েই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ (Gyanvapi Masjid)। ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, একাধিকবার বিদেশি হানাদারদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্দিরটি। ১৬৬৯ সালে মূল মন্দিরটি দখল করে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেন মোঘল বাদশাহ ঔরঙ্গজেব। এখনও মসজিদের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর ছবি দেখা যায়। অষ্টাদশ শতকে হিন্দুদের আবেগকে মান্যতা দিয়ে মসজিদের কাছেই আজকের বিশ্বনাথ মন্দিরটি তৈরি করেন মারাঠা রাজ্য মালওয়ার রানি অহল্যাবাই হোলকর। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশী বিশ্বনাথ করিডর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে বিশ্বনাথ মন্দির থেকে গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। ফলে জ্ঞানবাপী মসজিদের আশপাশের বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। মসজিদের কেয়ারটেকার সাইদ ইয়াসিন ‘The Wire’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলন যে চারপাশ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় জমায়েতের আশঙ্কা বেড়েছে। বাবরি ধংসের আগেও এভাবেই বিতর্কিত কাঠামোটির চারপাশ খালি করা হয়েছিল।
তবে আদালতে মামলার চলাকালীন মন্দির-মসজিদকে ঘিরে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এহেন সম্প্রীতি শান্তির বার্তা দিচ্ছে বইকী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.