শঙ্কর ভট্টাচার্য: দীর্ঘ ৪৮ বছর পর দলের দায়িত্ব ছাড়তে চলেছেন মুথাভেল করুণানিধি৷ তামিলনাড়ুর বিরোধী দলনেতা তথা করুণানিধির বড় ছেলে এম কে স্ট্যালিনই আসতে চলেছেন দায়িত্বে৷ আগামী ৪ জানুয়ারি ডিএমকের বিশেষ সাধারণ সভার বৈঠকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে ‘যুবরাজ’ স্ট্যালিনকে৷ তবে তাঁকে সম্ভবত কার্যনির্বাহী সভাপতি হিসাবে আনা হচ্ছে৷ দলের সভাপতির দায়িত্বে থাকছেন করুণানিধিই৷ এখন তাঁর বয়স ৯৪৷ তবুও পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নিতে চান না দ্রাবিড় আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা করুণা৷ কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্যই আর বেশি চাপ নিতে পারছেন না৷ তাই এই পালাবদল বলে জানা গিয়েছে৷ তার জন্য বর্ষবরণের দিন থেকেই সাজসাজ রব চেন্নাইয়ের আন্না সলাইয়ের ডিএমকের সদর দফতর আন্না আরাভায়ালমে৷ এদিকে শনিবার এআইএডিএমকে দলের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন শশীকলা নটরাজন৷ এদিন চেন্নাইয়ে দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন৷
তবে আম্মা জয়ললিতার মৃত্যুর পরেই রাজ্যে ফের প্রাসঙ্গিক হতে নড়ে চড়ে বসেছে দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাঝাঘম বা ডিএমকে৷ তখনই ঠিক হয়, আম্মার মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে, তাকে কাজে লাগাতে হবে প্রধান বিরোধী দলকে৷ এর মধ্যেই করুণানিধি আচমকাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১৫ ডিসেম্বর৷ তার পর থেকেই এই বিষয়ে তৎপরতা বৃদ্ধি পায়৷ করুণানিধি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৩ ডিসেম্বর৷ তার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্ষমতা হস্তান্তরের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷
তবে প্রশ্ন রয়েছে স্ট্যালিনকে ঘিরেও৷ তিনি দলের কোষাধ্যক্ষ এবং যুব সংগঠনের নেতা৷ তবে তাঁর বয়স এখন ৬৫৷ এই বয়সে কেমন করে যুব সংগঠনের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন? স্ট্যালিনের উপর ভর করে গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটেছে ডিএমকের৷ হইহই করে দু’টি নির্বাচনেই জিতে গিয়েছিল জয়ললিতার দল৷ তার পরে এই অবস্থায় কি তিনি দলে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে পারবেন? যদিও তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, জয়া আম্মার শূন্য স্থান কোনওভাবেই পূরণ করতে পারবেন না শশীকলা৷ দল ভাঙবেই, আজ হোক বা কাল৷ তার পরেই সেই জায়গায় আসতে পারবে ডিএমকে৷ যদিও হতে সময় রয়েছে প্রায় সাড়ে চার বছর৷ তবে সেই কথা মাথায় রেখেই এখন নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে ডিএমকে৷ যদিও একেবারে ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ করুণানিধি৷ তিনি আমৃত্যু দলের সভাপতির পদে থাকতে চাইছেন৷ অন্যদিকে করুণানিধি কিন্তু ধাপে ধাপে তৈরি করেছেন তাঁর ছোট ছেলেকে৷ প্রথমে ২০১৪ সালে বড় ছেলে আঝাগিড়িকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন৷ মেয়ে কানিমোঝিকেও দূরে সরিয়েছেন নবতিপর নেতা৷ তার পর এই সিদ্ধান্ত৷ স্ট্যালিন দলের হাল ধরলে দ্রাবিড় রাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে বলে মনে করছেন দলের নেতৃত্ব৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.