Advertisement
Advertisement

মেরিনা বিচেই সমাহিত করুণানিধি, ঠাঁই পেলেন আন্নাদুরাইয়ের পাশে

শেষযাত্রায় অগুনতি মানুষের ভিড়।

Karunanidhi buried in Marina sea beach
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:August 8, 2018 8:33 pm
  • Updated:August 8, 2018 8:45 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স যখন ১৪, তখনই যোগ দিয়েছিলেন রাজনীতিতে। হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন সেদিন। সে হিসেবে দেখতে গেলে প্রায় ৮০ বছর সক্রিয় রাজনীতি করেছেন মুথুভেল করুণানিধি। কখনও লড়েছেন বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে, কখনও লড়েছেন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আবার কখনও লড়েছেন জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ আট দশক ধরে যে লোকটা লড়াই করে গেলেন তাঁর শেষযাত্রা ঘিরে যে অপ্রত্যাশিত নাটকের সৃষ্টি হল তা হয়তো এড়িয়ে যাওয়ার শ্রেয় ছিল। এমজিআর বা জয়ললিতারা যেখানে স্থান পেয়েছেন সেখানে কেন স্থান পাবেন না করুণানিধি, তাঁর কোনও বৈধ যুক্তি তামিলনাড়ুর শাসকরা দেখাতে পারেননি। তাই আদালতে তাদের আপত্তি টেকেনি। শেষে নিজের পছন্দের এবং যোগ্য স্থানেই সমাহিত হলেন তামিলনাড়ুর পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী। নিজের রাজনৈতিক গুরু আন্নাদুরাইয়ের পাশেই চিরশয্যায় শায়িত হলেন কলাইনর। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হল তাঁকে। দেওয়া হল গানস্যালুট।  

 

কিন্তু মেরিনা বিচে ৬ ফিটের জায়গা পাওয়ার জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ হয়তো প্রাপ্য ছিল না করুণানিধির। জয়ললিতার দলের কাছে এ আচরণ যতটা অনভিপ্রেত, ততটাই অনভিপ্রেত আবেগাপ্লুত সমর্থকদের মরণপণ। সারাজীবন যাঁকে নায়কের আসনে বসিয়ে পুজো করে এসেছেন তাঁর শেষ ঝলক দেখার জন্য সমর্থকরা আকুল হবেন, সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। তাই রাজাজি হল থেকে মেরিনা বিচ পর্যন্ত করুণার সমাধি যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন রাজপথের দুধারে কাতারে কাতারে লোক। শেষযাত্রায় শামিল হওয়ার, আর তালাইভাকে শেষবারের মতো দেখার আকুল আর্তি সকলের চোখে মুখে। আর এই আকুলতায় অযাচিত দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াল। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে আহত হলেন অসংখ্য সমর্থক। প্রাণ হারাল দু’জন। বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করতে হল পুলিশকে। তাতেও আবেগ যেন বাধ মানে না তামিলভূমের।

নিজের রাজনৈতিক জীবনে সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন। আবার প্রয়োজনে শিবির বদল করেছেন একাধিকবার, একসময় বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগারদেরও সমর্থন করেছিলেন। বারবার সমাজের বিভেদ দূর করার চেষ্টা করেছেন। শেষযাত্রাতেও আর কোনও বিভেদ রাখলেন না কলাইনর। মিলিয়ে দিলেন শাসক-বিরোধী সব শিবিরকে। তাঁর শেষযাত্রায় যেমন হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তেমনি হাজির ছিলেন প্রধান বিরোধী কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী। যেমন হাজির ছিলেন ডিএমকের শীর্ষ নেতারা, তেমনি হাজির ছিলেন এআইএডিএমকে-র মন্ত্রীরাও। দক্ষিণের নেতাদের পাশপাশি হাজির ছিলেন উত্তরের নেতারাও। আগেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষযাত্রার সময় হাজির ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে সকলে একসঙ্গে বিদায় জানালেন দক্ষিণী রাজনীতির শেষ স্তম্ভকে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement