সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে ফের লিঙ্গায়ত ইস্যুতে সরগরম কর্নাটক। এই ইস্যুকেই কাজে লাগিয়ে বিরোধী বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলতে মরিয়া কংগ্রেস। সে জন্যই কৌশলী পদক্ষেপ করে রাজ্যের প্রভাবশালী লিঙ্গায়ত জাতকে আলাদা ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। এখন দরকার কেন্দ্রের সম্মতি। ফলে, দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে বিজেপির কোর্টে বল ঠেলে ভোটের আগে সিদ্দারামাইয়া সরকার মোক্ষম চাল দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে সিদ্দারামাইয়ার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি। ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে আগুন নিয়ে খেলছে কংগ্রেস। এমনই মন্তব্য করেছেন কর্ণাটক বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পি মুরলীধর রাও। তাঁর মতে, চেনা বিভেদের নীতি দিয়েই ভোট পেতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল।
[অদ্ভুত সিদ্ধান্ত! দূষণ কমাতে ৫০০ কুইন্টাল কাঠ পুড়িয়েই মহাযজ্ঞ]
কর্নাটকে লিঙ্গায়ত ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই মেরুকরণের রাজনীতি চলে আসছে। বিজেপির ইয়েদুরাপ্পা লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তাঁকে মুখ করেই আগেও সরকার গড়েছে বিজেপি। এবারও সিদ্দারামাইয়ার কংগ্রেস সরকারকে হঠাতে ইয়েদুরাপ্পাকে সামনে রেখেই ভোটের ময়দানে নামার কৌশল নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহদের দল। রাজ্যে ১৭ শতাংশ লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। ওই সম্প্রদায় রাজ্যে বড় ভোটব্যাঙ্ক। তাদের সমর্থন প্রয়োজন দুই দলেরই। ফলে, তাদের কাছে টানতি মরিয়া কংগ্রেস থেকে বিজেপি-দুই শিবিরই। এবার ভোটমুখী কর্নাটকে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের আলাদা ধর্মের দাবিতেই সিলমোহর দিল সিদ্দারামাইয়ার কংগ্রেস সরকার।
লিঙ্গায়তদের দাবি খতিয়ে দেখার জন্য কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি নাগমোহন দাসের নেতৃত্বাধীন একটি সাত সদস্যের কমিটি তৈরি করেছিল কর্নাটকের সংখ্যালঘু দপ্তর। গত ২ মার্চ সেই কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। যেখানে বলা হয়, লিঙ্গায়তকে আলাদা সংখ্যালঘু ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে। সোমবার সেই প্রস্তাবই মেনে নেন সিদ্দারামাইয়া। লিঙ্গায়তদের আলাদা ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতির দাবি নতুন কিছু নয়। কিছু দিন আগেই এই দাবি নিয়ে সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে বৈঠকও করেন প্রভাবশালী লিঙ্গায়ত হিসাবে পরিচিত উত্তর কর্নাটকের একটি মঠের প্রধান সিদ্ধলিং স্বামী। তিনি বলেছিলেন, “আলাদা ধর্মের আমাদের এই দাবি নতুন নয়। ৯০০ বছর ধরে এর জন্য লড়ে যাচ্ছি আমরা।”
[ক্ষমা চাওয়ার হিড়িক, গড়কড়ির কাছেও চিঠি কেজরিওয়ালের]
ঠিক ভোটের আগে তাদের সেই দাবিকে মেনে নিয়ে কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া সরকার বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও লিঙ্গায়তদের আলাদা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে কংগ্রেসের সিলমোহর দেওয়ার ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব নিজে নারাজ বিজেপি। কিছুদিন আগেই রাজ্যের জন্য আলাদা পতাকার প্রস্তাবে সায় দিয়ে তা কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য পাঠায় কর্নাটক সরকার। সেই লাইন মেনেই এই দিনের সিদ্ধান্ত। লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়কে আলাদা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে সিলমোহর দিয়ে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে তাদের ঘাড়েই দায় চাপাল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে কেন্দ্র সেই দাবি মানলেও লাভ কংগ্রেসের। আর না মানলেও লাভ। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, যদি কেন্দ্র সেই দাবি মেনে না নেয় তাহলে ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে নামবে তারা। আর মেনে নিলেও তারাই যে প্রথম উদ্যোগ নেয়, সেটাই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের কাছে প্রচারের কৌশল নেবে কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে এই ইস্যুতে কংগ্রেসকে কোন অস্ত্রে বিজেপি সামাল দেয়, সেটাই দেখার।
[যাত্রী পরিষেবার তথ্য নিয়ে হাজির রেলের নতুন পোর্টাল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.