সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দির (Hindi) আগ্রাসন তো আছেই। বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব কমিয়ে হিন্দি চাপাতে চাইছে কেন্দ্র, এমন অভিযোগ উঠছে অহরহ। তারই মধ্যে নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষায় দক্ষিণের রাজ্যগুলির আন্তরিক চেষ্টা, জেদও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে মিশে রয়েছে দক্ষিণ ভারতীয়দের (South India) বেশ খানিকটা গোঁড়ামিও। সদ্য কর্ণাটকে (Karnataka) ভাষা নিয়ে অটোচালক ও তরুণীর মধ্যে কথা কাটাকাটির যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তা ভাল করে দেখলেই বোঝা যায় দরকারি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও তাঁরা অন্য ভাষা কিছুতেই বলবেন না। উলটে নিজেদের ভাষা অন্যদের বলতে বাধ্য করবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এক অটোচালকের সঙ্গে এক তরুণীর কথোপকথন। কর্ণাটকে বেড়াতে গিয়েছেন উত্তর ভারতের এক তরুণী। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তিনি অটোয় উঠেছিলেন। সেখানেই চালকের সঙ্গে ভাষা নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় তাঁর। চালক জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কন্নড় জানেন কি না। জবাবে তরুণী পালটা প্রশ্ন তোলেন, তিনি কেন কন্নড়ে কথা বলবেন? তা শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চালক। রাগত স্বরে তিনি বলতে থাকেন, ”এটা কর্ণাটক, তোমাদের কন্নড়েই কথা বলতে হবে। এটা আমাদের জায়গা, তোমাদের নয়। তোমরা সব উত্তর ভারতের ভিখারি। আমি কেন হিন্দি বলব?” এনিয়ে উভয়ের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মাঝে অভিযোগ, অটো থেকে ওই তরুণীকে নামিয়ে দেন চালক। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার ভিডিও পোস্ট হতেই তা নিমেষে ভাইরাল (Viral) হয়ে যায়।
ঘটনা নিয়ে নেটিজেনদের নানা মত। কেউ কেউ অটোচালককে সমর্থন জানিয়ে বলছেন, এই অটোচালককে তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে। তিনি ন্যায্য প্রশ্ন তুলেছেন। কেন দক্ষিণ ভারতে বসে হিন্দি বলতে হবে? কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, কেউ যদি লখনউ গিয়ে কন্নড়ে কথা বলে, তাহলে তা কি গ্রহণযোগ্য? আবার যুক্তিবাদীরা বলছেন, দু’জনেই তো ইংরাজি জানে, তাহলে এই বিবাদ কেন? কারও ভাষায় তো অন্য কারও কথা বলার দরকার নেই। আবার কেউ স্থানীয় ভাষায় জোর দেওয়াকেই পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছেন।
এ তো একটা ঘটনামাত্র। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে ভাষাগত সমস্যা নতুন নয়। সেখানে কেবলই স্থানীয় ভাষায় কথা বলেন মানুষজন। ইংরাজি যোগাযোগের সাধারণ ভাষা হলেও তা সেভাবে কেউ বলতে চান না। ফলে দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা না জানা লোকজন সেখানে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। কিন্তু তাতে হেলদোল নেই সেখানকার ব্যবসায়ীদের। আসলে হিন্দি আগ্রাসন ঠেকাতে গিয়ে তাঁদের নিজস্ব গোঁড়ামি পর্যটকদেরও সমস্যায় ফেলে, তার কোনও সমাধান নেই এখনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.