সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কারগিল যুদ্ধে দেশের হয়ে লড়াই করেছিলেন তিনি৷ অথচ বিজেপি শাসিত অসমে সেই প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট মহম্মদ সানাউল্লাহকে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করা হল৷ তাঁকে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁর পরিজনেরা৷
১৯৬৭ সালে মহম্মদ সানাউল্লাহর জন্ম। তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি। ৩০ বছর সেনাবাহিনীতে থাকার পরে ২০১৭ সালে অবসর নেন৷ এরপর এএসআই হিসেবে সীমান্ত শাখায় যোগ দেন। তার সব তথ্যপ্রমাণই জমা দেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনীতেও পুলিশে যোগ দেওয়ার সময়ে তাঁর নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়। তবে বিচারক জানান, শুনানির সময় সানাউল্লাহ ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদানের কথা বলেছিলেন৷ তাই ভুল তথ্য দেওয়ার অপরাধেই তাঁকে ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যমনস্কতায় সানাউল্লাহ ভুল তথ্য দিয়ে ফেলেছেন বলেই দাবি অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার আজমল হকের৷ তাঁর অভিযোগ, আদালত জোর করে দেশের জন্য কাজ করা এক প্রাক্তন সেনাকর্মী ও রাজ্য পুলিশের এএসআইকে ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে৷ আপাতত তাঁকে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সানাউল্লাহর পরিজনেরা৷
ভারতীয় প্রমাণ হওয়ার পরেও বহু মানুষের নামের আগেই জুড়েছে ‘ডি’ ভোটারের তকমা৷ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছেও স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন অপমানিত সেনাকর্মীরা। তারই মাঝে বাহান্ন বছর বয়সি সানাউল্লাহ ‘বিদেশি’ ঘোষিত হওয়ায় অসন্তোষের আগুনে যেন ঘি পড়ল৷ এই ঘটনার পর সানাউল্লাহের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নামও এনআরসি থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনী আবহে সেনাদের ভূমিকাকে হাতিয়ার করেই বারবার প্রচার করতে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে৷ অথচ বিজেপি শাসিত অসমেই কারগিল যুদ্ধের সেনাকে ‘বিদেশি’ চিহ্নিতকরণকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না রাজনীতিকদের একাংশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.