সোমনাথ রায়, দ্রাস: ঘড়িতে তখন মঙ্গলবার সকাল ১১টা বেজে ১০ মিনিট। কিছুক্ষণ পরেই শুরু হবে কারগিল ওয়ার মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাংবাদিকরা এসে পৌঁছে গিয়েছেন দ্রাসের এই ‘যুদ্ধ সৌধে’। সেনাবাহিনীর প্রস্তুতিও চূড়ান্ত পর্যায়ে। নিয়ম করে চলছে মার্চ পাস্ট। আচমকা কান ফাটিয়ে আকাশে একসঙ্গে ঢুকে পড়ল চার-চারটি যুদ্ধ বিমান। সবই মিরাজ গোত্রের। দু’বার পাক খেয়ে উড়ে গেল সীমান্তের দিকে। ধাতস্ত হওয়ার মিনিট চারেকের মধ্যেই দেখি, সার দিয়ে আরও কয়েক ব্যাটালিয়ন সেনা এসে ঢুকে পড়ল দ্রাসে। মোবাইলে ছবি তুলতে গেলাম, সেনাবাহিনীর এক কর্নেল এসে আপত্তি জানালেন। হঠাৎ করে কেন এত গোপনীয়তা? গোটা এলাকায় একটা অজানা আতঙ্কের চাদর মুড়ে ফেলল।
কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতা করতে চাওয়ার জেরে নতুন করে যেন যুদ্ধ আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা এলাকায়। যে কোনও মুহূর্তে যে কোনও প্রান্ত থেকে ফের যুদ্ধ লাগার আশঙ্কায় যেন প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
উপত্যকার এই সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে বছরের অন্য সময়ের কোনও মিলই নেই বলে জানাচ্ছেন অভিজ্ঞরা। সাঁজোয়া গাড়ি, অস্ত্রের সম্ভার সবই রয়েছে। শুধু বহরে বেড়েছে। শুধুই সাজোঁয়া গাড়িতে সেনা টহল নয়, আকাশে চক্কর দিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে যুদ্ধবিমান। অত্যাধুনিক রাইফেল হাতে সারি সারি সেনা দাঁড়িয়ে থাকলেও নজর কাড়ছে রকেট লঞ্চার। এক আধটা নয়, গোটা এলাকাই ঘিরে ফেলা হয়েছে রকেট লঞ্চারে। ভারত-পাক সীমান্তে এই ছবি অস্বাভাবিক না হলেও কারগিল যুদ্ধের ২০ বছর পর হঠাৎই এই সাজসাজ রবের কারণ খুঁজছে আতঙ্কগ্রস্ত মন। যদিও উত্তর দেওয়ার লোক নেই। সকলেই ‘প্রোটোকলের’ দোহাই দিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই কারগিলে অনুপ্রবেশকারী পাক সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে ‘অপারেশন বিজয়’-এ সাফল্য পেয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। সেই সাফল্যের পর ২০ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের অজানা শঙ্কা গ্রাস করছে উপত্যকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.