প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কারগিল যুদ্ধের সমসাময়িক ঘটনার স্মৃতি উসকে দিল পাকিস্তান। সেই সময় গুজরাতের কান্দলাতেই আটক করা হয়েছিল উত্তর কোরিয়ার একটি বাণিজ্যিক জাহাজ। তাতে ছিল ব্যালাস্টিক মিসাইল তৈরির মাল মশলা ও প্রযুক্তি। ফাঁস হয়ে যায়, উত্তর কোরিয়ার সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান দূরপাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। কারগিলের আবহে সেই জাহাজ আটক করে সব কিছু বাজেয়াপ্ত করেছিল ভারত। গোয়েন্দা সূত্রে আগাম খবর ছিল, ভিন দেশি বাণিজ্যিক জাহাজের ভিতর গোপন অস্ত্র ও প্রযুক্তি পাচার করছে পাকিস্তান।
সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ফের গুজরাতের উপকূলে। হংকং-এর পতাকা লাগানো একটি বাণিজ্যিক জাহাজ পাকিস্তানের করাচির উদ্দেশে যাচ্ছিল। তাতে খাদ্যশস্য, ইলেকট্রনিক সামগ্রী থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ছিল। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী জাহাজটি কান্দালা বন্দরের কাছে আটক করে। গতিবিধি সন্দেহজনক থাকায় এবং জাহাজ কর্মীদের কথায় অসঙ্গতি থাকায় তল্লাশি চালানো হয় জাহাজে। বেশ কিছু রহস্যজনক ও আপত্তিকর সামগ্রী পায় উপকূলরক্ষীবাহিনী। পুলিশ মারফত খবর যায় শুল্ক দফতরে।
শুল্ক দপ্তরের উদ্যোগে পরীক্ষা চালান ফরেনসিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞরা। দেখা যায়, জাহাজে প্রচুর পরিমাণে ব্যালাস্টিক মিসাইল তৈরির সামগ্রী রয়েছে। ওই সামরিক সরঞ্জামগুলি ব্যালাস্টিক মিসাইল ছুড়তে এবং মিসাইলের ব্যাটারিকে সক্রিয় করতে কাজে লাগে। আন্তর্জাতিক বিধি ও নজরদারি এড়াতেই এভাবেই চিন এই প্রযুক্তি পাচার করছিল পাকিস্তানে।
দ্য কুই উন নামে ওই জাহাজের ভিতরে গোপন কুঠুরিতে থাকা যন্ত্রকে অটোক্লেভ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ড্রায়ার বলা হলেও, তা ব্যালাস্টিক মিসাইলে ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরকম কয়েক কুইন্ট্যাল ওজনের বিভিন্ন সরঞ্জাম পাকিস্তানে পাচার করা হচ্ছিল।
৩ ফেব্রুয়ারি আটক করা হয় জাহাজটিকে। কান্দালা বন্দরেই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র আধিকারিকরা জাহাজটিকে পরীক্ষা করেছেন। পাশাপাশি দ্বিতীয় দফার পরীক্ষার জন্য ভারতের পরমাণু বিজ্ঞানীদেরও সেখানে পাঠানো হচ্ছে। জাহাজে থাকা বড় অটোক্লেভগুলিকে পরীক্ষা করে দেখবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে চিনের জিয়াংসু প্রদেশের আনজে নদীতে থাকা জিয়ানাইন বন্দর থেকে ছেড়েছিল জাহাজটি। কান্দলায় সেটি নোঙর করে বিশ্রাম নিয়ে জ্বালানি ভরে করাচির পোর্ট কাসিমে যাবে বলে। কিন্তু তার আগেই জাহাজটিতে তল্লাশি চালানো হয়।
কাস্টমস বিভাগের আধিকারিকরা জানান, তাঁরা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মারফত খবর পেয়েছিলেন যে চিন থেকে একটি জাহাজ গুজরাত হয়ে পাকিস্তানের করাচি যাচ্ছে। আর সেই জাহাজে সন্দেহজনক পণ্য রয়েছে। একাধিক বিষয়ে সন্দেহ জাহাজটি করাচির পোর্ট কাসিমে যাচ্ছিল। পোর্ট কাসিমেই রয়েছে পাকিস্তানের বালাস্টিক মিসাইলের সরঞ্জাম তৈরির গুদাম।
ডিআরডিও-র প্রথম দলের মতো দ্বিতীয় দলও যদি একই রিপোর্ট দেয়, তাহলে জাহাজের জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। জাহাজ ও তার মালিকের বিরুদ্ধে রফতানি আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। সামরিক অপরাধ হিসাবে ভারত গোটা ঘটনাটিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পারে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানে এই সরঞ্জাম পাচার করছিল চিনের কোনও সংস্থা। নজর এড়াতে জাহাজে হংকংয়ের পতাকা লাগানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.