সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা তাঁর সন্তান। চোখের সামনে সন্তানকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখলে কেঁদে ওঠে মায়ের মন। কিন্তু সন্তানকে সারাজীবনের মতো হারাতে আর কোন মা-ই বা চান। এমন পরিস্থিতি যে মায়ের কাছে অগ্নিপরীক্ষাসম, তা বলাইবাহুল্য। এমন অবস্থারই শিকার কানপুরের এক মা। যিনি ছেলের কষ্ট আর সহ্য করতে না পারায় নিজেই তার স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই এই মর্মে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লেখেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে স্কিন ক্যানসারে ভুগছে জানকী দেবীর ছেলে। যার বয়স এখন দশ বছর। যতদিন যাচ্ছে, ছেলের যন্ত্রণাও বাড়ছে। কিন্তু দিন আনি দিন খাই পরিবারে মারণরোগ চিকিৎসার অর্থ কোথায়? তাও অনেক আশা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ছেলেকে নিয়ে পৌঁছেছিলেন। ডাক্তার রোগীকে পরীক্ষা করে জানান, বছর দশের বালকের স্কিন ক্যানসার হয়েছে। তবে তিনি ছুটিতে থাকবেন।
তাই রোগীর পরিবারকে ১৫ দিন পর আসার কথা বলা হয়। পরে চিকিৎসক জানকী দেবীর থেকে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা চান। নিজের আর্থিক পরিস্থিতির কথা জানিয়েও ফল পাননি জানকী দেবী। হাসপাতাল থেকে জেলাশাসকের দপ্তর, উপ-মুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা, জেলা আধিকারিক, কালেক্টর, স্থানীয় বিধায়ক নীলিমা কাটিয়ার, ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে সকলের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা। কিন্তু নিট ফল শূন্য। বেশিরভাগ দপ্তরই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। একমাত্র নীলিমা কাটিয়ার সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছিলেন। গত ১৪ মে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানান তিনি। কিন্তু তাতেও কোনও উত্তর মেলেনি।
মাথার উপর ছাদ ছিল না। আয় ছিল না। এমন অবস্থায় গত চার বছর ধরে একমাত্র মহন্ত অমরনাথপুরীই জানকী দেবী এবং তাঁর অসুস্থ ছেলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অমরনাথপুরী জানান, “গত পাঁচ-ছ’মাস ধরে সরকারি সাহায্যের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। চ্যারিটি থেকে যা অর্থ মেলে তা দিয়েই জানকীর ছেলের ওষুধ কেনা হয়।” অবশেষে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বুকে পাথর চাপা দিয়ে কঠিন বাস্তবের সঙ্গে লড়ছেন জানকী। আর কোনও উপায় না দেখে ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনই করলেন মা। শীঘ্রই কানপুরে আসার কথা রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের। তার আগেই চিঠি লিখে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন জানকী। তাঁর আশা, রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই কোনও পথ দেখাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.