সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার রাতে হাওড়া-যোধপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে চূড়ান্ত লাঞ্ছনার শিকার হলেন মা ও মেয়ে। যা শুনে শিউরে উঠতে হয়। অভিযোগ ট্রেনের মধ্যেই ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি ১৫ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সন্তানের সম্মান বাঁচাতে মেয়ের হাত ধরে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন মা।
নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে অসংরক্ষিত কামরায় কলকাতা থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন ৪০ বছরের মহিলা। নবম শ্রেণি কিশোরীর বাবা দিল্লিতে একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। মায়ের সঙ্গে বাবার কাছেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু চান্দারি ও কানপুর স্টেশনের মধ্যেই ঘটে বিপত্তি। কয়েকজন ব্যক্তি ওই কিশোরীর সঙ্গে ধর্ষণের চেষ্টা করে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে সব চেষ্টা যখন ব্যর্থ হয়, তখন তাকে নিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ বলে মনে করেছিলেন ওই মহিলা। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রায় দু’ঘণ্টা অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন মা ও মেয়ে। জ্ঞান ফেরার পর কোনওক্রমে চান্দারি স্টেশনে গিয়ে তাঁরা ওঠেন। আহত দুজনকে দেখে অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন স্টেশনের লোকজনই। তারপর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় লালা লাজপত রাই হাসপাতালে। রবিবার গোটা ঘটনার কথা জানতে পারে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)। কানপুর জিআরপি-র এসএইচও রামমোহন রাই জানান, ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Mother and daughter jump of a moving train in Kanpur after an alleged molestation attempt. Sustain injuries pic.twitter.com/AeRu9jpqCj
— ANI UP (@ANINewsUP) November 12, 2017
কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, “হাওড়া থেকে ট্রেন ছাড়ার পরই ১০-১৫ জন ব্যক্তি আমার মেয়েকে নানা অশালীন মন্তব্য করতে শুরু করে। তবে শুধু মুখের কথাতেই থেমে থাকেনি। মেয়েকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টাও করে তারা। এলাহাবাদের কাছে একবার ও এলাহাবাদ স্টেশনে আরেকবার আরপিএফ-কে গোটা ঘটনার কথা জানাই। সব শুনে কনস্টেবল আমার সঙ্গে এসে তিনজনকে চড় মেরে ধমকও দেন। তখনকার মতো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আধ ঘণ্টা পর আবার তারা স্বমহিমায় ফিরে আসে।” পুলিশকে ঘুষ দিয়েই তাদের দ্বিতীয়বার ফেরার সাহস হয়েছিল বলে দাবি মহিলার। ট্রেন এলাহাবাদ ছাড়তেই তারা আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। কিশোরীকে বিক্রি করে দেওয়ারও হুমকি দেয়। এরপর রাত ১০টা নাগাদ কিশোরী শৌচালয় যাওয়ার সময় চার ব্যক্তি তার উপর চড়াও হয়। মেয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন মা। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে কোনওরকমে মেয়েকে ছাড়িয়ে ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েন।
কিশোরীর বাবাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি কানপুরের হাসপাতালে আসছেন। তবে গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে আরপিএফ-এর ভূমিকা ও ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে। আরপিএফ-কে জানানোর পরও কেন এমন ভয়ংকর বিপাকে পড়তে হল তাঁদের? আরপিএফ কি সত্যিই ঘুষ নিয়েছিল? এসব আদৌ খতিয়ে দেখা হবে কিনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশাই রয়ে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.