সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বলিউডে লড়েছিলেন নেপোটিজমের বিরুদ্ধে। রাজনীতিতে এসেও সেই নেপোটিজমের সঙ্গেই লড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে দেখা গেল, যে কোনও নেপোটিজমের বিরুদ্ধেই তিনি লড়াইয়ে দড়। অতএব মাণ্ডিতেও শেষ হাসি হাসলেন বলিউডের ‘ক্যুইন’ কঙ্গনা রানাওয়াত।
জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে কঙ্গনা বলেন, ”আজকের এই দিনটা আমার জন্য বিশেষ দিন। প্রার্থী হিসেবে এটা আমার প্রথম নির্বাচন ছিল। যেহেতু রাজনীতিতে প্রথম, সেহেতু নানা অনিশ্চয়তা ছিল। এটা আমার প্রথম জয়ও। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার দলীয়কর্মীদের। নেতা জয়রাম ঠাকুরজিকে। যিনি প্রথম থেকে আমার পাশে ছিলেন। আমাদের সব বিধায়কদেরও ধন্যবাদ। তবে মাথানত করে ধন্যবাদ জানাই মাণ্ডির সমস্ত মানুষকে। মাণ্ডিকন্যা, মাণ্ডির বোন কঙ্গনাকে এত ভালোবাসা দিয়েছে। মাণ্ডির সেনা হিসেবে মাণ্ডিকে রক্ষা করব। বিকাশ করব। ”
VIDEO | Lok Sabha Elections 2024: “Today was very special for me as this was my first election. And this is my first victory for which I want to thank our legislative party leader Jairam Thakur ji, who led the entire campaign, all our workers and leaders. I extend my biggest… pic.twitter.com/DbdqD85rmk
— Press Trust of India (@PTI_News) June 4, 2024
‘খাঁটি দেশপ্রেমিক’ হিসাবে তিনি নিজেকে আগেই চিনিয়ে দিয়েছেন। এমনকী তাঁর জন্য বলিউডের হুজ-হু’র সঙ্গে লড়াই করতেও দ্বিধা করেননি। তাঁর খেসারত দিতে হয়েছে তাঁকে। তবে ঠোঁটকাটা কঙ্গনা অকুতোভয়। কোনও রকম লড়াই লড়তেই তিনি পিছপা নন কখনও। রাজনীতিতে এসেও তাঁর ব্যতিক্রম হল না। মান্ডির ভোটের অঙ্কটা এবার মোটেও সরল ছিল না। লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল আত্মপ্রতিষ্ঠা বনাম আত্মরক্ষার। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বনাম রাজনৈতিক অস্তিত্বরক্ষার। সেই লড়াইয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল খোদ কঙ্গনা। তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ছিলেন মান্ডির ‘রাজাসাহেব’ বিক্রমাদিত্য সিং। মান্ডির প্রয়াত রাজা বীরভদ্র সিংয়ের পুত্র। বীরভদ্র সিং হিমাচলের রাজনীতিতে কিংবদন্তি। বহুবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। হিমাচলে ‘বীরভদ্র মডেল’ বেশ জনপ্রিয়ও। যার সুফল সবচেয়ে বেশি পেয়েছে মান্ডিই। বিক্রমাদিত্যর বয়স মোটে ৩৩। ধারেভারে রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই এগিয়ে। কঙ্গনার জন্য মান্ডির লড়াই ছিল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পাওয়ার। কিন্তু বিক্রমাদিত্যর জন্য লড়াইটা নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার। এই আবহে অভিষেকেই ব্লকবাস্টার পারফরমেন্সের নমুনা রাখা সহজ নয়। কঙ্গনা পারলেন।
View this post on Instagram
তবে, এলেন দেখলেন আর জয় করলেন, ব্যাপারটা ততটাও সহজ ছিল না। কঙ্গনা জনপ্রিয়। পরিচিত মুখ। সে সব তো ঠিকই ছিল। তবে অতীতে তাঁকে ঘিরে যা বিতর্ক হয়েছে, তাঁর প্রভাবও পড়েছিল ভোটে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারও হয়েছিল সেই অভিমুখেই। রক্ষণশীল হিন্দুদের একাংশের আপত্তি ছিল কঙ্গনার অভিনয় পেশা এবং পোশাকআশাক নিয়ে। তবে সে সবের পাশপাশি কঙ্গনার প্লাস পয়েন্ট ছিল মোদি-হাওয়া। দেখা গেল, সেই হাওয়ায় ঘর গুছোতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি তিনি। তাঁর প্রচারেও সেই পরিশ্রমের ছাপ ছিল। ভোট ফ্যাশনেও দলের রং এবং হিমাচলী ঐতিহ্যকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। ভোটের দিন বুথ থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, “হিমাচল প্রদেশে গেরুয়া ঝড়। আশা করি, মাণ্ডির মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করবেন।” মোদির পাশে দাঁড়িয়ে মঞ্চ থেকে কঙ্গনা বলেছিলেন, ”প্রধানমন্ত্রী মোদির আদর্শ আর দর্শন মেনে কাজ করার দিন এসেছে। তিনি যে কারিগরি ও আধুনিক উন্নয়নমূলক কাজ করছেন তা অসাধারণ। এখন আমি তাঁর দলের অংশ এবং দলীয় কর্মী হিসাবে মান্ডির উন্নয়নমূলক কাজে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
View this post on Instagram
মান্ডির মানুষ শেষ পর্যন্ত তাঁকে আশীর্বাদই করেছেন। ‘রাজাসাহেব’কে ধরাশায়ী করে অভিষেকে কঙ্গনাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুধু বলিউডে নয়, রাজনীতিতেও তিনি ‘ক্যুইন’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.