নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সংসদের দুই কক্ষেই আক্রমণাত্মক তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভায় উপ-দলনেতা সাগরিকা ঘোষ কেন্দ্র তথা বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন। অষ্টাদশ লোকসভায় প্রথম ভাষণের শুরু থেকেই শ্লেষ ও কটাক্ষে নজর কাড়েন কল্যাণ। সরকার তো বটেই, এদিন তাঁর নিশানা থেকে বাদ যাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
দেড় বছরের মধ্যেই এই সরকার সাফ হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। তিনি বলেন, “শ্রীরামপুরে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ভোটে জিতেছি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজির (PM Modi) থেকে বেশি ভোটে। এবারে মোদিজি তো দু’টি ক্র্যাচ নিয়ে সরকার চালাচ্ছেন। একটি চন্দ্রবাবুর টিডিপি, আরেকটি নীতিশ কুমারের জেডিইউ। যে কোনও সময়েই ভেঙে পড়তে পারে এই সরকার।”
বক্তৃতায় নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করে কল্যাণ (Kalyan Banerjee) বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন অনেক সময়ে বিজেপি নেতাদের কথায় কাজ করেছে।’’ এদিন কল্যাণ যেভাবে মোদির দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন, তা সকলেরই নজর কেড়েছে। ভাষণের সেই অংশ সমাজমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে। যেখানে কল্যাণ বলেছেন, “এই সংসদেই উনি বলেছিলেন অব কি বার ৪০০ পার! খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। খেলা তো অনেক রকম হয়। চু কিতকিতটাও একটা খেলা। চু কিতকিতে চু ধরা ছিল ৪০০তে । তার পর কিতকিতকিতকিতকিতকিতকিত…কত হল? ২৪০!” কিতকিত বলতে বলতে যখন তিনি দু’হাত উপর থেকে নীচে নামাচ্ছেন তখন হাসির রোল ওঠে লোকসভায়।
একই আলোচনায় কল্যাণের পরেই অংশ নেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। কল্যাণের বক্তব্যের রেশ ধরেই নির্বাচন কমিশন রয়েছে বলেই রাজ্যে দু’বার নির্বাচন হয়। কোনও পঞ্চায়েত বা পুরসভায় কোনও নির্বাচন হয় না বলে দাবি করেছেন সৌমিত্র। তাতে রে রে করে ওঠেন কল্যাণ-সহ অন্য তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের প্রতিবাদের জেরে একবার বক্তব্যও থামিয়ে দিতে হয় সৌমিত্রকে।
অন্যদিকে রাজ্যসভায় সাংসদ হিসেবে প্রথম ভাষণেই সরকারকে বিঁধে ‘‘ঘৃণা নয় সাংবিধানিকভাবেই সংসদ চলার প্রয়োজন রয়েছে’’ বলে সওয়াল করেন সাগরিকা। বর্তমান সময়ের সংবাদমাধ্যমের সমালোচনাও করেছেন তিনি। কোনও প্রশ্ন না করে কীভাবে গণতন্ত্র নিশ্বাস নেবে, যেখানে সংবাদমাধ্যম জেলে রয়েছে সেখানে গণতন্ত্রে কীভাবে অক্সিজেন সরবরাহ হবে বলেও প্রশ্ন তুলেছেন সাগরিকা। তৃণমূল সাংসদের প্রথম ভাষণ এদিন সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। এদিন সাগরিকার বক্তব্যের শেষে দীর্ঘক্ষণ টেবিল চাপড়াতে দেখা গিয়েছে বিরোধী শিবিরের সকলকে। একই আলোচনায় অংশ নিয়ে সামিরুল ইসলাম ও প্রকাশ চিক বরাইক বিজেপির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.