সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের তিন রাজ্যে হারের দুঃখে সান্ত্বনা পুরস্কার তেলেঙ্গানা (Telengana)। গদি হারালেন কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrashekar Rao)। কর্নাটকের পর আরও এক দক্ষিণের রাজ্যে কংগ্রেসের (Congress) ক্ষমতা দখলে কেসিআরকেই দায়ী করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একদিকে যেমন পরিবারবাদ, দুর্নীতির মতো প্রসঙ্গ রয়েছে, পাশাপাশি আঞ্চলিক রাজনীতিকে অবহেলা, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে ৬৯ বছরের রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে।
চার রাজ্যের নির্বাচনের ফলে একটি বিষয় স্পষ্ট, উত্তরভারত যদি বিজেপির মাতৃভূমি হয়, তবে দক্ষিণে আজও তারা অনাথ। যদিও প্রাক ভোটপর্বে কেসিআর-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ উঠেছে বার বার। যদিও প্রকাশ্যে মোদি বিরোধি তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে কেসিআরের দিল্লি যাতায়াত বাড়ছিল নান অজুহাতে। এর মধ্যে গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, এনডিএতে (NDA) যোগ দিতে চেয়েছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর। যদিও সেই সময় এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিল দল বিআরএস।
পরিবারবাদ নিয়েও অভিযোগ বাড়ছিল কেসিআরের বিরুদ্ধে। নেপথ্যে কেসিআরের ছেলে কেটি রামরাও। যিনি বাবার মন্ত্রিসভার সদস্য বটে। কেটিআরের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। বাবার বদন্যাতায় বছরের বেশির ভাগ সময় ছেলে মার্কিন মুলুকে থাকেন বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। অন্যদিকে মেয়ে কে কবিতা রাও তেলঙ্গানা বিধান পরিষদের সদস্য। দিল্লির মদ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি।
এর পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে যে তেলেঙ্গানা আবেগের জোরে দুবার বিধানসভায় জয়, সম্প্রতি তা জলাঞ্জলি দেন কেসিআর! জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারে তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির (টিআরএস) নাম বদলে করেন ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)। তাতেই কি ভরা ডুবি? এই প্রশ্নও তুলছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
ছেলে কেটি রামরাও, মেয়ে কে কবিতা রাওয়ের মতোই বাবা খোদ মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরও দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছেন। গত পাঁচ বছরে প্রশ্ন উছেছে বেশ কয়েকজন বিধায়ককে নিয়েও। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, কেসিআর কেবল নিজের পরিবারের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন, অন্যদের জন্য নয়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেই যাননি কেসিআর। রাজ্য চালাতেন তাঁর বাড়ি থেকেই। কেসিআর হলেন সেই বিরল রাজনীতিক, যিনি তাঁর নিখোঁজ পোষ্যকে খুঁজতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে ময়দানে নামিয়ে দেন!
সম্প্রতি সরকারি কোষাগের বিপুল অর্থ ব্যয় করে অত্যাধুনিক সচিবালয় নির্মাণ করেছিলেন কেসিআর। চলতি বছরের এপ্রিলে নবনির্মিত সচিবালয়ে প্রথম বার বসেছিলেন। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ঝাঁ-চকচকে সচিবালয়ের মায়া কাটাতে হচ্ছে ৬৯ বছর বয়সি এই নেতাকে। একেই হয়তো বলে ভাগ্যের মার!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.