বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে কংগ্রেস শীতঘুমে চলে গিয়েছে। এই অভিযোগে এতদিন তুলোধোনা করছিল তৃণমূল। এবার তৃণমূলের পাশে দাঁড়াল সিপিএম। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করল সিপিএম (CPIM)। আক্রমণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন পার্টির দুই সেনাপতি সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri) ও প্রকাশ কারাত (Prakash Karat)। দুই শীর্ষনেতা কংগ্রেস সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে। প্রতিনিধিরা হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে চিল চিৎকার জুড়েছেন।
কংগ্রেসকে নিয়ে দ্বিমত ছিল পার্টির অভ্যন্তরে। কেরল সিপিএম প্রবল কংগ্রেস (Congress) বিরোধী হলেও বাংলা-সহ অন্য রাজ্য নরম মনোভাব নিয়ে চলছিল। কিন্তু পার্টি কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনেই পরিস্থিতির বদল হয়। প্রথমেই বিজেপির (BJP) বিরোধিতার প্রশ্নে কংগ্রেসের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন ইয়েচুরি। তিনি জানান, রাজ্যের সঙ্গে সর্বভারতীয় স্তরের পরিস্থিতি গুলিয়ে ফেললে চলবে না। সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বড় বিপদ। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঠেকাতে কংগ্রেসকে লাগবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই শতাব্দীপ্রাচীন দলের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। তাই ভোটের আগে কোনওভাবেই জোট নয়। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে ভোটের পরে জোট হবে।
ইয়েচুরির আক্রমণের পরেই খড়্গহস্ত হন প্রকাশ কারাট। পার্টি কংগ্রেস (Party Congress) উপলক্ষে ‘বিপদের মুখে ধর্মনিরপেক্ষতা’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় কংগ্রেস নেতাদের তুলোধোনা করেন। ধর্মনিরপেক্ষতার বিপদ নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছে, তখন সভায় হাজির না হয়ে কংগ্রেস বিজেপির বিরোধিতায় বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, কেরলে অনেক বিষয়ে কংগ্রেস-সিপিএমের মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা যখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তখন কংগ্রেস নেতৃত্বের নীরব অবস্থান বিপদ আরও বাড়াবে।
কংগ্রেস নেতৃত্বের ঘুম যত তাড়াতাড়ি ভাঙবে ততই মঙ্গল বলে মনে করেন তিনি। যেই আলোচনাসভায় প্রকাশ বক্তব্য রাখছিলেন সেখানে হাজির হওয়ার কথা ছিল কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের (Shashi Tharoor)। কিন্তু হাইকমান্ডের নির্দেশে আসতে পারেননি। হাইকমান্ডের এই সিদ্ধান্তে বিজেপির বিরোধিতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠবে। কারণ, এই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও সংঘ পরিবার দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সংবিধানিক অধিকারকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নীরব থাকলে ভবিষ্যতে ক্ষতি হবে বলেই মনে করেন কারাট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.