ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সম্মান রক্ষার বলি দম্পতি। ভিনজাতে বিয়ে করায় বেধড়ক মারধরের শিকার হলেন যুগলে। দম্পতিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে গৃহবধূর পরিবারের দিকে। এই ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম হয়ে আইসিউতে ভরতি আছেন দুজনেই। আক্রান্ত গৃহবধূর নাম সুমিত্রা (২৩)। তাঁর স্বামী ওমপ্রকাশ। শনিবার নারকীয় ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের যোধপুরের কালাউনা গ্রামে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, কোনও একটি কাজে স্বামীকে নিয়ে বাপেরবাড়ির গ্রামে গিয়েছিলেন সন্তানসম্ভবা সুমিত্রা। অভিযোগ, তাঁদের দেখতে পেয়েই ঘিরে ফেলে সুমিত্রার ভাইবোনেরা। একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে শুরু হয় বেধড়ক মারধর। অত্যাধিক মারে দুজনেই জ্ঞান হারান। গোটা দৃশ্য দেখতে ভিড় জমিয়েছিল গ্রামবাসী। তবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউই আক্রান্ত দম্পতিকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসেনি। ভিড়ের মধ্যে থেকেই কেউ স্থানীয় বিলাড়া থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আক্রান্তরা ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছেন। দুজনকেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। এদিকে পুলিশকে দেখেও সংযত হয়নি আক্রমণকারীরা। অচেতন দম্পতির দিকে ফের তেড়ে আসতে থাকে। জনরোষকে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেয়ে যায় পুলিশ। কোনওরকমে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দুজনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সুমিত্রার বাড়ির তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক তিন অভিযুক্ত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মারধর চলায় গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন ওই দম্পতি। ওমপ্রকাশের দুটি হাত ও একটি পা ভেঙেছে। ছমাসের অন্তঃসত্ত্বা সুমিত্রার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। দুজনকেই আইসিউতে রাখা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পরেই তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেবে চিকিৎসকরা।
দলিত যুবতী সুমিত্রা বিয়ে করেন জাঠ যুবক ওমপ্রকাশকে। পরিবারের অমতেই হয়েছিল বিয়ে। তাই বিয়ের পর থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াত ওই দম্পতি। বিয়ের এতদিন পরে হয়তো কোনও অঘটন ঘটবে না। এই আঁচ করেই বাপেরবাড়ির গ্রামে এসেছিলেন সুমিত্রা। কিন্তু তাঁর হিসেবে ভুল ছিল, তাঁদের বিয়ে যে এখনও মেনেই নিতে পারেনি পরিবারের লোকজন। নৃশংস মারধরে সেটাই প্রমাণিত হল। গোটা নারকীয় ঘটনা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করল গ্রামবাসী। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে এল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.