সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জেরে বেকার হয়েছেন দেশের বহু যুবক। কলমের জোর থাকলেও মিলছে না চাকরি। অর্থনীতির ধসে ক্রমেই মার খাচ্ছে একের পর এক ব্যবসা। ফলে চাকরি হারিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব। তাই মনরেগা প্রকল্পে ঝোঁক বাড়ছে শিক্ষিত সমাজের।
দীর্ঘ দুমাস লকডাউনে আয়ের পরিবর্তে ব্যয় বেড়েছে সরকারের। লাভের তুলনায় ক্ষতির ধসে নামতে নামতে খাদের কিনারায় গিয়ে ঠেকেছে বেশিরভাগ ব্যবসা। এমতাবস্থায় যুব সমাজের কাছে চাকরি দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু লকডাউন, করোনা, লাভ-ক্ষতির হিসেব দিয়ে তো আর পেটের জ্বালা জুড়োবে না। তাই অগত্যা মনরেগা প্রকল্পে নাম লিখিয়ে বেকারত্বের তকমা ঘোচাতে চায় যুব সমাজ। সেই চিত্রই বাস্তবে দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন রোশন কুমার। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ওই যুবক এখন কাজ হারিয়ে মহাত্মা গান্ধি ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি বা মনরেগা প্রকল্পের (MGNREGA) আওতায় কাজ খুঁজছেন। চলতি লকডাউনের কারণে ভিনরাজ্যে কাজ করত্ যাওয়া কমপক্ষে ৩০ লক্ষ পরিবার কর্মহীন হয়ে রাজ্যে ফিরে এসেছেন। মূলত সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant Workers) জন্য মনরেগা প্রকল্পে কাজের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শুধু পরিযায়ীরাই নন, দিনমজুরের কাজ করার জন্যে এখন আবেদন করছেন উচ্চশিক্ষিত বেকাররাও। পেটের টানে কোনও কাজ করতেই দ্বিধা করছেন না তাঁরা।
এমএ পাশ করেও মনরেগা প্রকল্পে কাজের আবেদন করা রোশন কুমারের কথায়, “আমি চাকরি করতাম এবং ভাল টাকাও উপার্জন করতাম, কিন্তু লকডাউনের কারণে আমার সেই চাকরিটাই চলে যায়”। এই গ্রামেরই আরেক যুবক সত্যেন্দ্র কুমার জানান, “আমার BBA ডিগ্রি থেকেও কোনও লাভ হল না। অনেক চেষ্টার পর, ৬,০০০-৭,০০০ টাকার একটি চাকরি পেয়েছিলাম। কিন্তু লকডাউনের ফলে সেটাও চলে গেছে। তাই মনরেগা প্রকল্পে নাম লিখিয়েছি।” রোশনের মত এরকম বহু শিক্ষিত, স্নাতকোত্তর ছেলেরা রাজ্যে দিন মজুর হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন।
এপ্রিল মাস থেকেই দেশে কমপক্ষে ৩৫ লক্ষ মানুষ মনরেগা শ্রমিক হিসাবে কাজ করার জন্য আবেদন করেছেন। একসঙ্গে এতো আবেদন এই দশকে কখনও জমা পড়েনি। অর্থনীতি, মানসিক অবক্ষয়, মৃত্যু-বোধহয় এরকম সকল আঙ্গিকেই এই দশক পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.