সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক হামলা, সংঘর্ষ নতুন নয়। কিন্তু সম্প্রতি বারবার ছাত্র রাজনীতির বিপজ্জনক, ভয়াবহ দিকটা প্রকাশ্যে আসছে নামী প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায়। যার সর্বাগ্রে বোধহয় নাম থাকছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের। খুব কম সময়ের ব্যবধানে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে জাতীয় স্তরে মেধাচর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠানটি।
রবিবার সন্ধেবেলা গার্লস হস্টেলে মুখ ঢাকা ‘বহিরাগত’দের তাণ্ডবে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের মাথা ফেটে যাওয়ার মতো গুরুতর ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে নিন্দায় সরব সব মহল। রাত না কাটতেই জেএনইউ ক্যাম্পাস থেকে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে নানা দিকে। আজ, সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে ডাক দিয়েছে এসএফআই সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। ইন্ডিয়া গেটের কাছে বিক্ষোভ জমায়েত হতে পারে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তর পর্যন্ত মিছিলের সম্ভাবনা আছে।
কলকাতাতেও রাজ্য নেতৃত্বের তরফে হবে প্রতিবাদ। রবিবার রাতেই তা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই কর্মসূচি পালনি করবে মুম্বই, আলিগড়, পুনে, হায়দরাবাদের এসএফআই নেতৃত্বও।
রবিবারের ঘটনার অভিঘাত এতটাই যে খবর পাওয়ামাত্র নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে জেএনইউ কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। দিল্লি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে অমিত শাহ নিজে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষকে কার্যত চাপে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রোক্টর এবং রেক্টরকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
Union Home Minister has spoken to Delhi Police Commissioner over JNU violence and instructed him to take necessary action. Hon’ble minister has also ordered an enquiry to be carried out by a Joint CP level officer and asked for a report to be submitted as soon as possible.
— गृहमंत्री कार्यालय, HMO India (@HMOIndia) January 5, 2020
এই ইস্যুতে একসারিতে দেখা যাচ্ছে শাসক-বিরোধীদের। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ থেকে শুরু করে বিরোধী রাহুল গান্ধী, সকলের একটাই বক্তব্য, ক্যাম্পাসে ঢুকে এমন নৃশংস তাণ্ডব ভয়াবহ, অকল্পনীয়। এ রাজ্যেও ছবিটা প্রায় একই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। তিনি একটি প্রতিনিধি দলও পাঠাচ্ছেন আক্রান্ত পড়ুয়া, শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে। দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে চারজনের প্রতিনিধিদলে থাকবেন সাজদা আহমেদ, বিবেক গুপ্তা, মানস ভুঁইঞা।
প্রায় একই ভাষায় নিন্দা করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, বৃন্দা কারাতরা, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও।
JNU ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষের মাথায় গভীর ক্ষত।পুলিশী সহায়তা নিয়ে মুখোশধারী সংঘ শাবকদের কাপুরুষোচিত আক্রমণ। পাশের ছবি তে সুচরিতা সেন,JNU র অধ্যাপিকা ছাড় পাননি এদের হাত থেকে। কাল/পরশুর মধ্যে, রাজ্য জুড়ে,সব অংশের মানুষকে নিয়ে, প্রয়োজনে ঝান্ডা ছেড়ে,ব্যাপকতম প্রতিবাদ হোক। pic.twitter.com/LuYFum1P0O
— Surjya Kanta Mishra (@mishra_surjya) January 5, 2020
Kerala CM Pinarayi Vijayan: The onslaught on students is the result of intolerance. The Nazi-style attack on students and teachers on the campus of Jawaharlal Nehru University are carried out by those who want to create unrest and violence in the country. (file pic) pic.twitter.com/jDvI5qLgpW
— ANI (@ANI) January 6, 2020
এমনিতেই হস্টেলে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে জেএনইউ-তে পড়ুয়াদের প্রতিবাদ চলছিলই। তার জেরে ক্যাম্পাসে একটু উত্তেজনা ছিলই। তারই মধ্যে রবিবারের হামলার ঘটনা, যাতে এবিভিপির ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে জেএনইউ-এর পাশে প্রায় সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে পুনে, হায়দরাবাদ, যাদবপুর – সকলেই আলাদাভাবে প্রতিবাদে শামিল। আজ থেকে এই প্রতিবাদ যে আরও ছড়িয়ে পড়বে, তা বোঝাই যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রচুর পুলিশ, নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.