সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ক্যাম্পাসে যথেষ্ট বিশৃঙ্খল হয়েছে। পড়াশোনার পরিবেশও বিঘ্নিত হয়েছে। তাই এবার বাড়তি নজর দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত তিনদিন ধরে জেএনইউ-তে হামলা, অশান্তির পর নীরবতা ভেঙে মুখ খুললেন উপাচার্য এম জগদীশ কুমার। বললেন, পড়ুয়ারা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করান সেমিস্টারের জন্য। এও জানালেন যে আহত ছাত্রছাত্রীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।
জেএনইউ-তে হামলার পর থেকে উপাচার্যের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের দায়ী করে সোমবার বিবৃতি জারি করেছিলেন। সমালোচনাও করেছিলেন। তখনই প্রশ্ন উঠছিল, উপাচার্য এমন নীরব কেন? অবশেষে মঙ্গলবার তিনি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং উপরাজ্যপালের কাছে গিয়ে রিপোর্ট দেন। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”অতীতকে পিছনে ফেলে, আসুন নতুন করে শুরু করি। যাঁরা আহত হয়েছেন, সেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য আমার উদ্বেগ হচ্ছে। ওঁরা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।” এরপর তিনি বলেন, ”আমি আশা করছি, খুব শিগগিরই ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরবে। এখানে যাঁরা আছেন, বা যাঁরা বাইরে আছেন – সবাইকে বলছি, সেমিস্টারের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করান।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের কথা সকলকে মনে করিয়ে উপাচার্য এম জগদীশ কুমার আরও বলেন, ”জেএনইউ বিতর্ক, আলোচনার জন্য বিখ্যাত। রবিবার যা হল, তাতে আমরা ব্যথিত। আমরা পুলিশকে ডাকার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যারা এর আগে রেজিস্ট্রেশনের বিরোধিতা করেছিল, তারা এই হিংসার ঘটনায় যুক্ত ছিল বলে মনে হচ্ছে। যদিও সবই তদন্তসাপেক্ষ।” সেদিনের ঘটনার পর তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে। দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার আধিকারিক এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি SIT তদন্ত করবে বলে জানান তিনি। তবে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও উঠেছে যে এসএফআই-এর সমস্ত গতিবিধির উপর ড্রোনে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
হস্টেলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে মাসখানেক ধরেই জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে ছাত্র সংসদ এসএফআইয়ের নেতৃত্বে। বর্ধিত ফি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সেমিস্টারও বয়কট করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা সেমিস্টার দিতে আগ্রহী, তাদেরও রেজিস্ট্রেশন করাতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ফলেই ক্যাম্পাসে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে আগেই জেএনইউ-য়ের রেজিস্টার প্রমোদ কুমার এসএফআই সদস্যদের দায়ী করেছিলেন। ফি নিয়ে সুস্থ সমাধানে আসতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে পড়ুয়ারা হাজির থাকলেও, একাধিকবার তা এড়িয়েছেন উপাচার্য নিজে। আর এই ঘটনার পর তাঁর আবেদন কতটা কার্যকরী হয়, সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.