সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্নাতক স্তরে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর জেরে মৌচাকে ঢিল পড়বে বলে মনে করছে সিপিএম। তাদের মত, অন্য আঞ্চলিক ভাষাভাষী মানুষ এতে ক্ষুব্ধ হবেন। আখেরে দেশের ঐক্য বিনষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এই বামপন্থী দল। এই বিতর্কের মধ্যে ‘হিন্দি বাধ্যতামূলক’ করা নিয়ে আলোচনা পিছিয়ে দিয়েছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)। ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানো হচ্ছে এবং বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিতর্কের শুরু অবশ্য গত বছরের জু্লাইয়ে। প্রাথমিকভাবে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার ভাবনা প্রকাশ করে ইউজিসি। তারপর সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে স্নাতক স্তরে হিন্দি চালু করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়। সিপিএমের দাবি, অবিলম্বে ওই সার্কুলার প্রত্যাহার করতে হবে। এর আগে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার একাধিক চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন ফের এই পদক্ষেপ, প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। মঙ্গলবার পলিটব্যুরোর তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গোটা দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা চলছে। ইউজিসি-র এই পদক্ষেপে সিপিএম পলিটবু্যরো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এর আগে খসড়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই বিষয়ে পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল। তারপরও কেন এমনটা করা হচ্ছে, তা আমাদের ভাবাচ্ছে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা দিয়ে বিতর্ক শেষ করতে চেয়েছে। তা সত্ত্বেও ইউজিসি নিজে থেকে এটা করতে পারে না। ভারতে ভাষা ও সংস্কৃতির বিরাট বৈচিত্র্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও নিয়ামক সংস্থা কোনও আলোচনা ছাড়া একটি ভাষাকে জাতীয় স্তরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে মৌচাকে ঢিল পড়বে। তাতে অন্য ভাষার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। দেশের ঐক্য বিনষ্ট হতে পারে।’ শিক্ষাক্ষেত্রে যুক্ত সর্বস্তরের মানুষ ও সংগঠনের কাছে সিপিএম আবেদন করেছে, জনমত গঠন করে চাপ দিয়ে ইউজিসি-কে সার্কুলার প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হোক।
এই বিতর্কের মধ্যেই শুক্রবার হিন্দি বাধ্যতামূলক করা নিয়ে আলোচনায় বসার কথা ছিল জেএনইউ কর্তৃপক্ষের। যদিও ছাত্র সংসদের তরফে এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিএ এবং বি-টেক কোর্সে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছে। পরিস্থিতির জেরে মঙ্গলবার ওই বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার জানান, ‘কিছু ছাত্র মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য অবাঞ্ছিত, নিন্দনীয়। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’ যার জেরে ছাত্রবিরোধী সমস্ত পদক্ষেপের উপর তারা নজর রাখবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.