সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে খোঁচা দিয়েছিল বিজেপি। তাতেই ফুঁসে উঠলেন ঝাড়খণ্ডের হবু মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। রাজ্য বিধানসভায় বিজেপি জোটকে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা-কংগ্রেস ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের জোট। তার পরেই কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলকে আক্রমণ করে হেমন্ত সাফ বলেছেন, ‘সিংহের শাবক সিংহই হয়।’ অর্থাৎ পিতা তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো শিবু সোরেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে তিনি যথেষ্ট সক্ষম।
পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডে বিজেপি শাসনে সাধারণ মানুষের দুর্দশার জেরেই তাঁরা এত বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছেন বলে হেমন্ত মন্তব্য করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি নোটবন্দি এবং দেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি চালু করা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্যের উদাহরণ দিয়েছেন। তাঁর মতে, শুধু মুসলিম নন, অন্য ধর্মের সাধারণ মানুষও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
বিধানসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ছবিটা স্পষ্ট হতেই একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে হেমন্ত বলেন, “মানুষ মারা যাচ্ছে। তাদের দুর্দশার শেষ নেই। নোটবন্দির সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কত মানুষ মারা গিয়েছেন। বিজেপির তৈরি আইনের জেরে মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তাই এর দায়িত্ব আপনাদের তো নিতেই হবে। শুধু মুসলিম বলে নয়। দেশের আমআদমি, সাধারণ মানুষকে ফের লাইনে দাঁড়াতে হবে নিজেদের ভারতীয় হিসাবে প্রমাণ দেওয়ার জন্য। দেশে এত কৃষক আছেন। তাঁরা পেটের তাগিদে চাষ করবেন না কাজকর্ম ছেড়ে নথির জন্য ছুটবেন?”
সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে জেএমএম, কংগ্রেস ও আরজেডি জোট ৪৭টি আসন পেয়েছে। গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ছিল ৪১টি আসনের। বিজেপির ঝুলিতে ২৫টি আসন। ফল ঘোষণার পরই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রঘুবর দাস। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ৪৪ বছরের হেমন্ত। তিনি রাজ্যের পঞ্চম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৩-’১৪-য় ১৭ মাসের জন্য কুর্সিতে বসেছিলেন তিনি। ঝাড়খণ্ড তৈরির আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ তথা তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্ত একবার উপমুখ্যমন্ত্রীও হয়েছিলেন। জোটসঙ্গী ছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিজেপির অর্জুন মুণ্ডা। কিন্তু জেএমএম সমর্থন প্রত্যাহার করায় সরকারের পতন হয়। রাজ্যে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।
জেএমএম-সহ বিরোধী দলের প্রতি বিজেপির আক্রমণের অন্যতম অস্ত্র ছিল পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ। সে বিষয়ে হেমন্তর জবাব, “খুবই পীড়াদায়ক। শুনলে মনে হয়, কেউ যেন বাবা-মাকে অসম্মান করছে। সিংহের বাচ্চা তো সিংহই হবে। না কি? মুচির ছেলে যখন মুচির পেশাই গ্রহণ করে তখন তো কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাহলে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর ছেলে রাজনীতিতে এলে এত বিতর্ক কেন?” তিনি আরও জানান, আমিই এটা প্রথম করেছি, ওটা করেছি বলে লোককে বোকা বানানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। একজন মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি অনেক প্রসারিত হওয়া উচিত। জঙ্গলে হোক বা গ্রামে বা শহরে, সমস্ত সমস্যা সমাধানে তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন হবু মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.