সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক মাস পর গত শুক্রবার কাশ্মীরে ২২টি সোশ্যাল সাইট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। যার মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টুইটারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সোশ্যাল সাইটও। চালু করা হয়েছিল মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। জম্মু-কাশ্মীরের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে একথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এমনকী রাত ৮ টা ৩০ থেকেই খোলা যাচ্ছিল বিভিন্ন সাইট। কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও পেরোতে পারল না, ফের একবার বন্ধ করে দেওয়া হল ইন্টারনেট পরিষেবা। ঠিক কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটা জানায়নি জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সেনার হাতে হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার সবজার আহমেদ মারা যাওয়ার পরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাতে উপত্যকা জুড়ে নতুন করে বিক্ষোভ ছড়াতে না পারে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল ফেসবুক, টুইটার-সহ একাধিক সোশ্যাল সাইট ও অ্যাপ্লিকেশনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। বন্ধ করা হয়েছিল মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। কারণ এর মাধ্যমেই সাধারণ মানুষকে সেনা ও পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। তারপরেই ওই সাইটগুলি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলেও শনিবার কমান্ডার সবজারের মৃত্যুর পরই উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অডিও-র মাধ্যমে উসকানিমূলক বার্তা পাঠানো হতে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গিদের সাহায্যের জন্য কাশ্মীরি যুবকদের উসকানিও দেওয়া হয়। এমনকী, ত্রালে মাইক ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বানও দেওয়া হয়। সোশ্যাল সাইটগুলির মাধ্যমে যাতে ফের উত্তেজনা না ছড়াতে পারে সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জায়গায় জায়গায় সেনা বা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে যখনই সংঘর্ষ ছড়িয়েছে, তখনই সাধারণ যুবকদের হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকের সাহায্যে সেখানে জমায়েত এবং ইট-বৃষ্টির জন্য উসকানি দেওয়া হত। কীভাবে সাধারণ মানুষের ওপর সেনা অত্যাচারের চালায়, সেই সমস্ত তথ্য তুলে ধরা হত। আর এই উসকানিতেই কাজের কাজটি হাসিল হয়ে সন্ত্রাসবাদীদের। এই প্রসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, উসকানি দেওয়ার জন্য ৩০০টি-রও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ব্যবহার করা হত। আর গ্রুপগুলিকে বিক্ষোভকারী যুবকদের একত্রিত করার জন্য ব্যবহার করা হত।
এদিকে, শনিবার উপত্যকায় জঙ্গি অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে ভারতীয় সেনা। পুলওয়ামার ত্রাল সেক্টরে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে মারা গিয়েছে বুরহান ওয়ানির উত্তরসূরী ও হিজবুল কমান্ডার সবজার ভাট। গত বছর জুলাইতে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর সবজারই হিজবুলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিল। এদিন সবজার ছাড়াও ত্রাল সেক্টরে আরও এক জঙ্গিকে নিকেশ করেছে সেনা। এছাড়া রামপুর সেক্টরে সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে আরও ছয় জঙ্গি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.