সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “মেরেছ কলসির কানায়, তা বলে কি প্রেম দেব না তোমায়?” প্রভু শ্রীচৈতন্যর সেই বাণীই যেন চিত্রায়িত হল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। ফুটে উঠল ‘বসুধৈবকুটুম্বকম’-এর চালচিত্র। পড়ুয়াদের হাতে লাল গোলাপ। বিনয়ের সঙ্গে এগিয়ে দিচ্ছেন পুলিশদের দিকে। মুখে সংহতির গান। হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সৌভ্রাতৃত্বের, বন্ধনের। যেন কেউ বলছে- এ দেশ তোমার, আমার, সবার।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (Citizenship Amendments Act) প্রতিবাদ জ্বরে আক্রান্ত রাজধানী। জলকামান, গোলাগুলি, উড়ে আসা পাথরের ঢিল, রক্তপাত, ১৪৪ ধারা, কাঁদানে গ্যাসে কাঁদছে রাজধানী দিল্লি। গত ১৫ ডিসেম্বর জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের প্রতিবাদ মিছিলে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ, ক্যাম্পাসের ভিতর ঢুকে রীতিমতো ছুঁড়েছে কাঁদানে গ্যাস। পুরুষ থেকে মহিলা, কোনও হোস্টেলই বাদ যায়নি, যা পুলিশি অভিযান থেকে রেহাই পেয়েছে! লাঠিচার্জের জন্য কারও মাথা ফেটেছে তো কেউ বা আবার শরীরের নান জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। আওয়াজ উঠেছে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের তরফেও। তবে ‘Go Back Police’ স্লোগানের বদলে এখন দক্ষিণ দিল্লিতে শোনা যাচ্ছে সৌভ্রাতৃত্বের গান। বইছে সংহতির হাওয়া। জামিয়া ছাত্রছাত্রীদের হাতে এখন গোলাপ। প্রতিবাদী চিৎকার গর্জন এখন পরিণত হয়েছে সুরেলা কণ্ঠের গানে।
ঘৃণা নয়, ভালবাসাই একমাত্র পথ! অগ্নিগর্ভ দিল্লির বেহাল দশা ফেরাতে এখন এটাই মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে পড়ুয়াদের। হাতে লাল গোলাপ নিয়ে, গিটারে গান তুলে তাঁরা গাইছেন সংহতির গান। যেন এক নতুন ভোর। শুরুর সকাল। বন্ধ হওয়া ইন্টারনেট পরিষেবা, ১৪৪ ধারা, এসবের মাঝেও পুলিশি বাঁধা অগ্রাহ্য করে ছাত্রছাত্রীরা পৌঁছে গিয়েছিলেন যন্তর মন্তরে সামনে। সেখানেই দেখা গেল তাঁরা গোলাপ এগিয়ে দিচ্ছেন পুলিশের দিকে। ওঁদের শোনাচ্ছেন গান।
নজরে পড়ল জামিয়ার বাইরে নমাজ পড়ছেন মুসলিমরা। সেই নমাজ পড়তে যাতে কোনওরকম অসুবিধে না হয়, মানববন্ধন তৈরি করেছেন পড়ুয়ারা। যে মুহূর্তের ছবি, ভিডিও নেটদুনিয়ায় আপাতত ভাইরাল। পড়ুয়াদের সৌভ্রাতৃত্ব, সংহতির বার্তা মন জয় করে নিয়েছে নেটিজেনদের।
#WATCH Delhi: Students and other people of Muslim community offered Namaz outside the gates of Jamia Millia Islamia university. Members of other faiths formed a human chain around them. pic.twitter.com/FEPZOqI1MX
— ANI (@ANI) December 19, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.