সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অযোধ্যায় বড়সড় হামলার ছক কষছে নিষিদ্ধ জঙ্গিসংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ (JeM)। বড়দিনে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জনপ্রিয় চ্যাটিং অ্যাপ টেলিগ্রাম ব্যবহার করে মেসেজ চালাচালি করছে জইশ প্রধান মাসুদ আজহার। জইশ-সহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনগুলি বার্তা আদান-প্রদানের জন্য সাধারণত এই অ্যাপটিই ব্যবহার করে থাকে। সেই সাংকেতিক মেসেজের অর্থ উদ্ধার করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে পাকিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠন অযোধ্যায় বড়সড় সন্ত্রাস হানার পরিকল্পনা করছে।
গত নভেম্বরে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর কোনও রক্তপাত বা গন্ডগোল হয়নি দেশের কোনও প্রান্তে। যা পছন্দ হয়নি পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির। তখন থেকেই শোনা যাচ্ছিল ভারতের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানোর ছক কষছে তারা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল মাসুদ আজহারের নেতৃত্বাধীন জইশ-ই-মহম্মদ। অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণার পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তাদের স্লিপার সেলগুলি তৎপর হয়ে উঠেছিল বলে খবর পায় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সমস্ত রকম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সর্তক করে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং(র) ও অন্য সংস্থাগুলি। গত অক্টোবরে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল জইশ জঙ্গিরা। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও হিমাচলপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নাশকতা করার উদ্দেশ্যে সাংকেতিক ভাষায় মেসেজ চালাচালিও হচ্ছিল। ক্রিসমাসের মধ্যে সেই পরিকল্পনার ছক ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
চলতি বছর স্বাধীনতা দিবসের আগেও হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছিল মুম্বই উপকূলে। মুম্বই হামলার ধাঁচে অনেকটা কাসভদের কায়দায় জলপথে সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কায় চূড়ান্ত সতর্কতা নিয়েছিল ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল রাজধানী দিল্লিতেও। যদিও সেবার কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু বছর শেষে গোয়েন্দা সংস্থার খবরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। প্রত্যেকটি নিরাপত্তা সংস্থাকে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে অযোধ্যাকে। গোটা শহরেই নিরাপত্তা আঁটসাট করা হয়েছে বলে খবর। ভারতে জইশের কার্যকলাপের উপর গভীরভাবে নজর রাখতেও শুরু করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ সন্ত্রাস হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন চল্লিশেরও বেশি সিআরপিএফ জওয়ান। সেনা কনভয়ে সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল জইশ-ই-মহম্মদই। তার আগে ২০০১ সালে পার্লামেন্টে জইশ জঙ্গিদের সন্ত্রাস হামলায় কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.