স্টাফ রিপোর্টার: ফণীর জেরে পুরীর রথযাত্রার জাঁকজমক নিয়ে এবার অনেকেই আশঙ্কিত ছিলেন। কিন্তু মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের কৃপায় উলটে এবছর ফুলে ফুলে ঢাকা হল শ্রীক্ষেত্র। নীলমাধবের মন্দির রথযাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগেই দিল্লির এক ভক্তের দান করা ২০ লক্ষ টাকার ফুলে সাজিয়ে দিলেন পুরোহিত,সেবায়েতরা। বস্তুত এই কারণে বুধবার সকালে রথযাত্রা উপলক্ষে ‘পহন্ডি’ শুরুর আগেই ফুলের সৌরভে মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছে মহাপ্রভু জগন্নাথদেবের আরাধ্য ক্ষেত্র পুরীর মন্দির। এবছর থেকে পুরীর মন্দির ও রথযাত্রা নিয়ে একটি নতুন ওয়েবসাইট চালু হল। সূচনা করলেন পুরীর মহারাজ গজপতি দিব্যসিংহ। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে বসে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রথযাত্রা তথা জগন্নাথদেবের দৈনন্দিন পূজার্চনা নিয়েও যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নানা রীতিনীতি ও উপাচার শেষ হতে দুপুর গড়িয়ে যায়। বিকেল তিনটের পর শুরু হয় রথযাত্রা। কেউ মনোস্কামনা পূরণ করতে চান। কারও বা লক্ষ্য পুণ্য অর্জন। পুরীতে প্রতি বছরের মতো রথযাত্রায় শামিল হয়েছেন প্রায় দশ লক্ষ পুণ্যার্থী। এবছর প্রচুর বিদেশিরও সমাগম হয়েছে পুরীতে। রাজনীতির লোকজনও তৎপর। আগে থেকে হোটেল বুক করে এ রাজ্য থেকে প্রচুর মানুষ পুরী গিয়েছেন। বুধবার সন্ধে থেকেই সেজে উঠেছিল পুরীর আনাচ-কানাচ। গ্র্যান্ড রোডে ভিড় সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এদিন ভোররাত থেকেই সিংহদুয়ারের সামনে জমা হয়েছে ভিড়। গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রাকে বের করে আনার মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে চান সবাই। অনেকে স্বর্গদ্বারের রাস্তায় জমায়েত হয়েছেন একবার রথের দড়ি ছোঁবেন বলে।
এ রাজ্যের মাহেশ, মহিষাদল, ইসকন-সহ বিভিন্ন জায়গায় রথযাত্রা ঘিরে প্রবল উন্মাদনা। প্রতিবেশী বাংলাদেশেও সাড়ম্বরে রথযাত্রার
অনুষ্ঠান পালিত হয়। ঢাকার ধামরাইলে দেশের সর্ব বৃহৎ রথ উৎসবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে যেতে না পারলেও, সরকারি
শীর্ষ পদাধিকারীদের পাঠিয়েছিলেন। পুরাণ মতে রথের দিন কিছু নিয়ম মানলে মনকাস্কামনা পূর্ণ হয়। রথযাত্রার পুণ্য তিথিতে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি চাইলে সকাল গঙ্গাস্নান করতে হবে। সম্ভব হলে নতুন পোশাক পরার বিধান দিয়েছেন পুরাণবিদরা। তা না থাকলে কোনও সমস্যা নেই, যে কোন শুদ্ধ বস্ত্র পরলেও চলবে। সবচেয়ে বড় পরামর্শ, রথ না টানলেও একবার অন্তত রশি ছুঁতে হবে। এদিনই খুঁটি পুজোর মাধ্যমে দুর্গোৎসবের সূচনা করেন উদ্যোক্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.