সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যতদূর চোখ যায় সাদা চতুর্দিক৷ শুধু বরফ আর বরফ৷ দেখা গেল সেই বরফের ভিড়েই চাপা পড়ে রয়েছে একজন মানুষ৷ দেহাবশেষের আশেপাশেই রয়েছে বিমানের ভাঙা অংশও৷ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০ হাজার ফুট উপরে ভারত-চিন সীমান্তে হিমাচলপ্রদেশের ঢাকা নামক হিমবাহ থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় হতবাক পর্বতারোহীরা৷
‘নেহেরু মাউন্টেরিয়াং ইনস্টিটিউট’-র পর্বতারোহী দলের তরফে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ সেনার বিশেষ উদ্ধারকারী দল পৌঁছায় ঘটনাস্থলে৷ বরফের খাঁজের মধ্যে থেকে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা৷ উদ্ধারের পর সেনারা জানতে পারেন, যাঁর দেহটি উদ্ধার হয়েছে তিনি বিমানচালক৷ এভাবেই বরফের খাঁজে আরও অনেকের দেহ আটকে থাকতে পারে বলেই অনুমান সেনা কর্তৃপক্ষের৷
১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড় থেকে লেহ যাত্রা করে ভারতীয় বায়ুসেনার মালবাহী বিমান এএন-১২৷ খারাপ আবহাওয়ার কারণে হিমাচল প্রদেশের রোহতাং পাসের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি বিমান৷ তারপর তা ভেঙে পড়ে বরফের চাঁইয়ের মধ্যে৷ সেই সময় বিমানে ছিলেন ১০২জন৷
দুর্ঘটনার পর অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি৷ এরপর বিভিন্ন সময় বারবার বিমানটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু বারবারই বাদ সাধে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া৷ তাছাড়া সেনা কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়েও দেওয়া হয়, ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০ হাজার ফুট উপরে ভেঙে পড়া বিমানের ভগ্নাবশেষ উদ্ধার কার্যত অসম্ভব৷ এছাড়াও ক্রমাগত বিমানের ভগ্নাবশেষের উপর বরফ পড়তে থাকে৷ ফলে বিমান আরোহী ও চালকের দেহ কতটা নিচে চলে গিয়েছে, তাও আন্দাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে সেনার৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ে গিয়েও চালানো হয় তল্লাশি অভিযান৷ কিন্তু তাতেও লাভ কিছুই হয়নি৷ হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন সকলেই৷ এই পরিস্থিতিতে প্রায় ৫০ বছর পর আচমকা কীভাবে বিমানচালকের দেহ বরফের চাঁই থেকে উদ্ধার হল আর কীভাবেই বা সামনে এল বিমানের ধ্বংসস্তূপ, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.