সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় তিন দশক বাদে অ-গান্ধী সভাপতি পেতে চলেছে কংগ্রেস (Congress)। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য এবারের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। যদিও শেষ মুহূর্তে রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) সভাপতি পদে চেয়ে সাতটি প্রদেশ কমিটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে তাতেও রাহুলের মত বদলের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। অতএব, লড়াই এবার অ-গান্ধীদের। এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের অন্দরে যা পরিস্থিতি, তাতে এবারে সভাপতি নির্বাচনে সরাসরি লড়াই হতে চলেছে শশী থারুর এবং অশোক গেহলটের (Ashok Gehlat)।
১৭ অক্টোবর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। শনিবার থেকে শুরু মনোনয়ন পেশ। তাতে শশী থারুর যে মনোনয়ন দেবেন সেটা একপ্রকার নিশ্চিত। সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে থারুর সেই জল্পনা আরও উসকে দিয়েছেন। দলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। থারুরের (Shashi Tharoor) মত, সুস্থভাবে ভোট হলে তাতে কংগ্রেসই শক্তিশালী হবে। থারুর প্রার্থী হচ্ছেন, এটা নিশ্চিত হয়ে গেলেও গেহলটের প্রার্থী হওয়াটা এখনও নিশ্চিত নয়। গান্ধী পরিবার এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠরা চাইছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রার্থী করতে। কিন্তু তিনি রাজস্থানের রাজপাট ছেড়ে দিয়ে এসে সভাপতি পদে প্রার্থী হতে রাজি নন। তবে, সোনিয়া গান্ধী যদি নির্দেশ দেন সেটা উপেক্ষা করাটা সহজ কাজ হবে না গেহলটের পক্ষে। শেষ পর্যন্ত যদি গেহলট প্রার্থী হন, তাহলে প্রায় সাড়ে ৩ দশক বাদে কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য লড়বেন অ-গান্ধী দুই নেতা।
এদের মধ্যে গেহলট গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসাবে ভোটের ময়দানে নামবেন, আর শশী থারুর নামবেন বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি হিসাবে। যদিও ইদানিং থারুর গান্ধী পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। তিনি ইতিমধ্যেই রাহুলের নেতৃত্বে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো’ পদযাত্রার পা মিলিয়েছেন। আবার সোনিয়ার সঙ্গেও দেখা করেছেন। আসলে সব নেতাই জানেন, গান্ধী (Gandhi Family) পরিবারের সমর্থন ছাড়া সভাপতি নির্বাচনে জয় কার্যত অসম্ভব। সেদিক থেকে দেখতে গেলে গেহলটের পাল্লা ভারী। কারণ, গান্ধী পরিবারের সমর্থন রয়েছে তাঁর দিকেই। আর বিরোধীরা যাই বলুক, কংগ্রেসের অন্দরে এখনও গান্ধী পরিবারের প্রভাব অবিংবাদী।
তাছাড়া গেহলট প্রবীণ নেতা। বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ আছে তাঁর। সেটাও তাঁর পক্ষে যাচ্ছে। একাধিকবার রাজস্থানের (Rajasthan) মুখ্যমন্ত্রী থাকার অভিজ্ঞতাকেও সাহায্য করবে তাঁকে। তবে প্রার্থী হিসাবে থারুরও নেহাত ফেলনা নন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, ঝকঝকে বাচনভঙ্গী, এবং জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিতির নিরিখে তিনি কিছুটা এগিয়ে থাকবেন গেহলটের থেকে। কংগ্রেসের অন্দরে যে বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, থারুর তাঁদের প্রতিনিধি। যদিও থারুরের বিপক্ষে যাচ্ছে এই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী ভেঙে যাওয়াটা। আসলে কংগ্রেসের এই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অধিকাংশ নেতা হয় দল ছেড়েছেন, নাহয় মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে থারুরের পিছনে সেভাবে শক্তিশালী কোনও গোষ্ঠীর সমর্থন নেই। সুতরাং, এই লড়াইয়ে জিততে হলে থারুরকে হয় গান্ধী পরিবারের আস্থা অর্জন করতে হবে। আর নাহয় গান্ধীদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রাখতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.