সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ৭ মাস ধরে মেতেই-কুকি জাতি সংঘর্ষে পুড়ছে মণিপুর। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও ধিকি ধিকি জ্বলছে হিংসার আগুন। এই গোষ্ঠী সংঘর্ষে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের জন্য নাকি মেলেনি কবর দেওয়ার স্থানও। দেহ সৎকারেও প্রকট হয়েছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। মাস তিনেক ধরে সুরাহা হয়নি এই অমানবিক পরিস্থিতির। এবার এনিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন উপজাতি সংগঠনের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার মণিপুরে (Manipur) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা এ কে মিশ্র এবং আইবির যুগ্ম অধিকর্তা মনদীপ সিংহ তুলির সঙ্গে বৈঠক করেন উপজাতি সংগঠন আইটিএলএফের সদস্যরা। তাঁদের আলোচনায় অশান্ত মণিপুরের একাধিক বিষয় উঠে আসে। যার মধ্যে এই কবরের সমস্যা অন্যতম। গত ৮ আগস্টও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই সংগঠনটির আলোচনা হয়েছিল দিল্লিতে। তখন বলা হয়েছিল, জাতি হিংসায় মৃত কুকিদের দেহ কবর দেওয়ার জন্য বোলজাং গ্রামের একটি মাঠ বেছে নিয়েছিল তারা। তাদের দাবি ছিল ওই এলাকা কুকি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর জেলার অন্তর্গত। কিন্তু মেতেইরা পালটা দাবি করে ওই এলাকাটি বিষ্ণুপুর জেলায়। যা মেতেই অধ্যুষিত। ফলে এলাকা কার এই উত্তর খুঁজতেই আটকে যায় মৃতদেহ সৎকারের কাজ। এই বিতর্কের জেরে এখনও ৩৫টি দেহ মর্গেই রয়েছে। তাই এই সমস্যার সমাধান পেতে আরও একবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চাইছে উপজাতি সংগঠন আইটিএলএফ।
এছাড়াও এই বৈঠকে কেন্দ্রের কাছে মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আদিবাসী সংগঠন আইটিএলএফ। সম্প্রতি মোরেহর এসডিপিওর হত্যাকাণ্ডের পরে যেভাবে মেতেই কমান্ডো নামিয়ে ‘গাজোয়ারি’ করছে রাজ্য সরকার বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধিদের কাছে আপত্তি জানানো হয়। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা এ কে মিশ্র জানিয়েছেন, তাঁদের পক্ষ থেকে হিংসায় বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংগঠনটির সমস্ত দাবি জমা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কুকি ও মেতেইদের মধ্যে চলা সংঘাতে এখনও রক্ত ঝরছে মণিপুরে। পরিসংখ্যান বলছে, এপর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন। এবার মৃতদের দেহ সৎকার নিয়েও চলছে সাম্প্রদায়িক লড়াই। এই কবরস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই চূড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর সীমান্তে সংঘাতে জড়ায় দুই সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ১০০ জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.