সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাতেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেছিলেন, আমরা যখন ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন করব, তখন হয়তো মহাকাশে ভারতের পতাকা ওড়াবেন কোনও ভারতীয় সন্তান। তারও আগে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ইসরো পরীক্ষা করেছিল মহাকাশে মানব অভিযানের প্রথম ক্রু এসকেপ টেস্ট। যেটা করা হয় মহাকাশ অভিযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। অর্থাৎ মহাকাশযাত্রায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁরা যাতে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পারেন, তার ব্যবস্থা যথাযথ রয়েছে কি না তা দেখে নেওয়া। তাই মহাকাশে ভারত যে মানব অভিযাত্রী পাঠাতে চলেছে, তা বুঝতেই পেরেছিল দেশবাসী। মঙ্গলবার ইসরো জানাল, পৃথিবী থেকে মহাকাশে পৌঁছানোর সেই যাত্রাপথের মেয়াদ ফুরোবে ১৬ মিনিটেই। অর্থাৎ শ্রীহরিকোটার মহাকাশ বন্দর থেকে রওনা হওয়ার ঠিক ১৬ মিনিটের মধ্যে মহাকাশে পৌঁছে যাবেন তিন মহাকাশচারী। জানালেন, ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন।
মঙ্গলবার দিল্লিতে ভারতের প্রথম মানববাহী মহাকাশ অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিল ইসরো। সেখানেই ইসরোর চেয়ারম্যান শিবন বলেন, “২০২২ সালে গগনযান মহাকাশে পাঠাবে ইসরো। শ্রীহরিকোটা ছাড়ার পর তিন মহাকাশ অভিযাত্রীকে নিয়ে ৩০০-৪০০ কিমি দূরের লোয়ার আর্থ অর্বিটে ১৬ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবে গগনযান। তিন মহাকাশ অভিযাত্রী থাকবেন একটি ক্রু মডিউলে, যা একটি সার্ভিস মডিউলের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এই দুই মডিউল নিয়ে তৈরি অরবিটাল মডিউলটিকে মহাকাশে বয়ে নিয়ে যাবে জিএসএলভি এমকে থ্রি রকেটের আধুনিকতম সংস্করণ।”
রাশিয়া, আমেরিকা ও চিনের পর ভারত চতুর্থ দেশ হিসেবে মহাকাশে মানব অভিযাত্রী পাঠাতে চলেছে। এর আগে ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে গিয়েছিলেন একমাত্র রাকেশ শর্মাই। ভারতীয় বায়ুসেনা পাইলট রাকেশ অবশ্য মহাকাশে গিয়েছিলেন রাশিয়ার মহকাশযানে। সেক্ষেত্রে ইসরোর এই উদ্যোগে এই প্রথম ভারতের তৈরি মহাকাশযানে ভারতীয় নভোশ্চরেরা পাড়ি দেবেন মহাকাশে।
[ মোবাইলে কথা বলা নিয়ে বচসা, দিদিকে শ্বাসরোধ করে খুন নাবালকের ]
তবে, মহাকাশে মানুষ পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলেই মহাকাশযানগুলি বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণে প্রবল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই তাপকে সহ্য করার মতো প্রযুক্তি তৈরিই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ইসরো প্রধান জানান, মহাকাশে অভিযাত্রীদের নিয়ে ৭ দিন থাকবে মডিউলটি। সেখানে মধ্যাকর্ষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাও করবেন অভিযাত্রীরা। পরে ফেরার পথে অরবিটাল মডিউলটি দিক পরিবর্তন করবে। ডি-বুস্ট প্রক্রিয়া চালু হবে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২০ কিমি উচ্চতায় ক্রু মডিউল ও সার্ভিস মডিউলের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটবে। এরোব্রেকের সাহায্যে গতি নিয়ন্ত্রিত হবে এবং আরব সাগরে আছড়ে পড়ার আগের মুহূর্তে একাধিক প্যারাশ্যুট খুলে যাবে। সব মিলিয়ে পৃথিবীতে পৌঁছতে সময় লাগবে ৩৬ মিনিট। জানিয়েছেন শিবন।
তিনি বলেছেন, মূল অভিযানের আগে পরীক্ষামূলক ভাবে দু’বার অভিযাত্রীহীন গগনযান পাঠানো হবে মহাকাশে। আগামী ৩৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে যাত্রীহীন পরীক্ষামূলক ওই দু’টি উড়ান। সফল হলে চূড়ান্ত পর্যায়ে ৪০ মাসের মাথায় সম্পন্ন হবে দেশের প্রথম মানব অভিযাত্রী-সহ মহাকাশ যাত্রা।
[ অবশেষে নোট বাতিলের রিপোর্ট পেশ, ব্যর্থতাতেই ‘শিলমোহর’ আরবিআইয়ের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.