সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির রুদ্ররোষে ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। কেরলের ওয়েনাড়ে (Wayanad) মঙ্গলবারের ভূমিধসে এখনও পর্যন্ত মৃত ২৭৬ জন। নিখোঁজের সংখ্যা দুশোর বেশি। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার জঙ্গলঘেরা গোটা চারেক গ্রাম কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার উপগ্রহে চিত্রে ভয়াবহতার যে ছবি সামনে এসেছে, তা দেখে শিউরে উঠছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরাও। কী দেখা গিয়েছে ওই ছবিতে?
ইসরোর উপগ্রহের তোলা দুর্যোগের আগে এবং পরের হাই রেজোলিউশন ছবি আঁতকে ওঠার মতো। সেদিন গভীর রাতে একসঙ্গে প্রায় ৮৬ হাজার বর্গ মিটার এলাকায় ধস নেমেছিল। গোটা এলাকা ভূমিধসে পাহাড় ভেঙে নেমে আসে ইরুভাইফুঝা নদীতে। ধসের মাটি, রাস্তা, ঘর-বাড়ি জলস্রোতে ভেসে যায় প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে। উপগ্রহচিত্র থেকে জানা গিয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫৫০ মিটার উচ্চতায় একই এলাকায় আগেও ধস নেমেছে। ইসরোর স্যাটেলাইট চিত্র বলছে, ওয়ানাড়ে যত বড় এলাকায় একসঙ্গে ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়েছে, তা ৫টি রাষ্ট্রপতি ভবনের সমান।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত দেড়শো জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নিখোঁজ। স্থানীয়দের মতে, নিখোঁজদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ওয়ানড়ের জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের কারণে হাজার হাজার টন পাথর এবং মাটির যে স্তূপ তৈরি হয়েছে, তা খুঁড়ে উদ্ধারের কাজ চালানো খুব কঠিন হচ্ছে। ওয়ানড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর প্রায় নিশ্চিহ্ন। স্থানীয় চার্চ, স্কুল-কলেজের যা অবশিষ্ট আছে, সবকিছুকেই ব্যবহার করা হচ্ছে দুর্গতদের আশ্রয়স্থল এবং চিকিৎসার জন্য।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan) জানিয়েছেন, দু’দিনের অভিযানে দেড় হাজার জনের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরানো গিয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের রাজ্য এমন বেদনাদায়ক দৃশ্য আগে কখনও দেখেনি।” বিপর্যয়ের সম্ভবত এখানেই শেষ নয়। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারও ওয়ানড়ের আশাপাশে প্রবল বর্ষণ হতে পারে। ফলে বিপর্যয় বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.