সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক সুজাত বুখারি হত্যাকাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাইজিং কাশ্মীরের এডিটর-ইন-চিফের হত্যায় জড়িত পাকিস্তানের আইএসআই ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কাশ্মীরি সংগঠন হুরিয়ত কনফারেন্স। গোয়েন্দা রিপোর্টে সামনে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
[গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের দায়ভার নিলেন বিজেপি সাংসদ, সমালোচনা বিরোধীদের]
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সম্প্রতি হুরিয়তের আপত্তি সত্ত্বেও দুবাইতে একটি সম্মেলনে যোগ দেন বুখারি। তারপরই তাঁকে ডেকে রীতিমতো শাসানি দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে বুখারি হত্যার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ডিআইজি ভিকে ভিরদির নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে কাশ্মীর পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতেই মোটর সাইকেল আরোহী তিন আততায়ীর ছবি প্রকাশ করেছিল পুলিশ। শুক্রবার আরও এক সম্ভাব্য দুষ্কৃতীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের নাম-পরিচয় জানতে সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসনের তরফে আবেদনও করা হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বুখারির হত্যার পিছনে লস্কর-ই-তইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের যোগসাজশ রয়েছে। পাকিস্তানি জঙ্গি নভিদ জাটের নাম উঠে এসেছে সন্দেহের তালিকায়। ইতিমধ্যেই নভিদের নাম একাধিক মামলা রয়েছে। দিন কয়েক আগেই শ্রীনগরের হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় নভিদ। আততায়ীদের দলে আরও যে দু’জন ছিল তাদের একজন লস্করের মেহরাজউদ্দিন বাঙ্গারু এবং অন্যজন ওয়াজা। দু’জনেই পুলওয়ামার বাসিন্দা। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর নির্দেশে জঙ্গিরা তাঁকে খুন করেছে। যদিও প্রকাশ্যে বুখারি হত্যার কড়া নিন্দা করেছে পাকিস্তান। কিন্তু তাদের ইঙ্গিত, কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টের সঙ্গে এই হত্যার যোগ রয়েছে।
শুক্রবার বারামুলার ক্রিরিতে পৈতৃক গ্রামে বুখারির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। প্রবল বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে শেষযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন পরিবার, বন্ধুবান্ধব, অনুরাগী কয়েক হাজার মানুষ। প্রসঙ্গত, গত তিন দশকে এই নিয়ে কাশ্মীরে চারজন সাংবাদিক খুন হলেন। ১৯৯১ সালে আলসাফা-র সম্পাদক মহম্মদ শবন বকিলকে হত্যা করে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিরা। ১৯৯৫ সালে প্রাক্তন বিবিসি সাংবাদিক ইউসুফ জামিলের দপ্তরে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। কপালজোরে প্রাণে বাঁচেন ইউসুফ। মারা যান এএনআই-এর চিত্রসাংবাদিক মুস্তাক আলি। ২০০৩ সালে নাফা-র সম্পাদক পারভেজ মহম্মদ সুলতানকে তাঁর দপ্তরে হত্যা করে হিজবুল জঙ্গিরা।
[‘আকবর নয়, রানা প্রতাপই মহান’, যোগীর মন্তব্যে বিতর্ক]
অন্যান্য দিনের মতো এদিনও রাইজিং কাশ্মীর প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম পৃষ্ঠা জুড়ে ছিল সাদা-কালোয় নিহত সম্পাদকের ছবি। সঙ্গে শ্রদ্ধার্ঘ্য, ‘আপনি আমাদের ছেড়ে হঠাৎ চলে গেলেন। কিন্তু পেশার প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা এবং সাহস আমাদের চলার পথে আলো দেখাবে। যেসব কাপুরুষরা আপনাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল, আমরা তাদের সামনে কিছুতেই মাথা নত করব না। সত্য যতই অপ্রিয় হোক, তা প্রচারের ব্রত থেকে আমরা কিছুতেই বিচ্যুত হব না। আপনি যেখানেই থাকুন, শান্তিতে থাকুন।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.