Advertisement
Advertisement
শর্মিলা চানু

‘দেবী’ থেকে ‘মা’, দুই কন্যার জননী হলেন লৌহমানবী ইরম শর্মিলা

রবিবার বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে যমজ কন্যার জন্ম দেন চানু৷

Iron lady Sharmila Chanu gives birth to twin baby girl
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 13, 2019 10:49 am
  • Updated:May 13, 2019 10:49 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লৌহমানবী থেকে মা৷ জীবনের নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করলেন মণিপুরের ‘দেবী’ ইরম শর্মিলা চানু৷ তাও এক নয়, দুই কন্যার জননী হলেন লৌহমানবী৷ বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে রবিবার যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ছেচল্লিশ বছরের শর্মিলা চানু৷ পাশে ছিলেন স্বামী ডেসমন্ড কুটিনহো৷ মেয়েদের নামও ঠিক করে ফেলেছেন শর্মিলা এবং ব্রিটিশ স্বামী ডেসমন্ড কুটিনহো৷ বাবা-মায়ের নামের সঙ্গে মিলিয়ে দুজনের নাম রাখা হয়েছে নিক্স সখি এবং অটাম তারা৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর, মা-সন্তান সকলেই সুস্থ রয়েছেন৷ শর্মিলার মুখপাত্র জানিয়েছেন, দ্রুতই কন্যাদের ছবি প্রকাশ করা হবে৷

[আরও পড়ুন: ইতিহাস হারাচ্ছে, তবুও নাগরিক জীবনের উন্নয়নই অগ্রাধিকার বারাণসীবাসীর]

মণিপুর তথা সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারত থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা বা আফস্পা প্রত্যাহার, নাগরিকদের সুরক্ষিত জীবন নিয়ে ইরম শর্মিলা চানুর দীর্ঘ সংগ্রামের কথা সর্বজনবিদিত৷ ২০০০ থেকে ২০১৬ সাল, টানা ১৬ বছর ধরে তাঁর অনশন তাঁকে জনসাধারাণের কাছে ‘দেবী’তে উত্তীর্ণ করেছিল৷ দীর্ঘ অনশনের শেষের দিকে চানুর শরীর এত অসুস্থ হয়ে পড়ে যে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে নলের মাধ্যমে তরল খাবার দেওয়া শুরু করেন চিকিৎসকরা৷ কিন্তু নিজের আদর্শে এতটাই দৃঢ় ছিলেন লৌহমানবী, সেই তরল খাবারটুকুও নিতে প্রায়শয় অস্বীকার করতেন৷ সুদিনের স্বপ্ন ছিল তাঁর দু’চোখ ভরা৷ বিশ্বাস করতেন, তাঁর এই আন্দোলনই একদিন মণিপুর থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করবে কেন্দ্র৷ সুরক্ষার নামে অযথা সেনাবাহিনীর অত্যাচার সহ্য করতে হবে না৷

Advertisement

[আরও পড়ুন:ফণীর তাণ্ডবে বদলেছে চিলকা হ্রদ, আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?]

কিন্তু রাষ্ট্রের শক্তি তাঁর আন্দোলনের শক্তির চেয়ে অনেকগুণ বেশি৷ তাই শর্মিলা চানুর এমন আত্মত্যাগ তাঁকে আর পাঁচজনের কাছে ‘দেবী’ করে তুললেও, রাষ্ট্র সেই ‘দেবী’র কাছে মাথানত করেনি৷ আফস্পা প্রত্যাহার করা হয়নি উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলি থেকে৷ ভিতরে ভিতরে নিজের আন্দোলনের ব্যর্থতা টের পেয়েছিলেন চানু৷ ২০১৬র ৯ আগস্ট৷ সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করে, ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙলেন মণিপুরের লৌহমানবী৷ জানালেন, এই আন্দোলনের অসাড়ত্ব তিনি টের পেয়েছেন৷ রাজনীতির মাঠে নেমে সম্মুখ সমর চান৷ পিপলস রিসারজেন্স অ্যান্ড জাস্টিস অ্যালায়েন্স নামে দল তৈরি করে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন ইরম শর্মিলা চানু৷ কিন্তু গণতন্ত্রের খেলা বোঝা কঠিন৷ মাত্র ৯১টি ভোট পেলেন মণিপুরবাসীর ‘দেবী’৷

[আরও পড়ুন: শক্তি বাড়ল ভারতীয় বায়ুসেনার, হাতে এল অত্যাধুনিক মার্কিন হেলিকপ্টার]

এখানেও ব্যর্থ হয়ে শর্মিলা চানু ফিরে গেলেন তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোর কাছে৷ সিদ্ধান্ত নিলেন, বিয়ে করবেন৷ মণিপুর থেকে অনেক দূরে গিয়ে সংসার বাঁধবেন৷ সেইমতো ২০১৭ সালে সুদূর দক্ষিণ ভারতের কোদাইকানালের এক গির্জায় সাদামাটা বিয়ে সারেন শর্মিলা চানু-ডেসমন্ড৷ এরপর মাতৃদিবসেই তাঁর কোল আলো করে এল নিক্স এবং অটাম৷ দেবীর তকমা মুছে ফেলে এখন শর্মিলা চানুর স্রেফ এক মানবী, এক জননী৷   

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement