সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াও…।” কিংবদন্তি বাঙালি কবির এই প্রবাদ-পংক্তি পড়ার কথা নয় মুন্না কুরেশীর। কে মুন্না? তিনি উত্তরকাশীর (Uttarkashi) সুড়ঙ্গ-যুদ্ধে জয়ের অন্যতম কারিগর। যে ১২ জন খনিশ্রমিক সুড়ঙ্গে ‘ইঁদুর-গর্ত’ খুঁড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মুন্না। কাজ শেষে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন, সুড়ঙ্গে ঢুকতে গিয়ে যদি তিনি মরেও যেতেন, তাহলেও কিছু যেত আসত না। যেহেতু ৪১ জনের প্রাণ বেঁচে যেত।
যন্ত্র যা পারেনি, সেই কাজ করেছেন মুন্না কুরেশী ও তাঁর ১১ সঙ্গী। ১৭ দিনের মাথায় ঘুটঘুট অন্ধকার সুডঙ্গ থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। এই বিষয়ে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুন্না জানিয়ে দেন, মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চেয়ে বড় কাজ পৃথিবীতে নেই। নিজের জীবন বাজি রেখে অমন কাজ করতে পেরে তিনি ভীষণ খুশি। মুন্না আরও বলেন, “শেষ পাথরটা সরাতেই ওদের দেখি। কাজ শেষে সবাই আমাদের আনন্দে জড়িয়ে ধরে। ৪১ জনকে বাঁচাতে গিয়ে এক জন যদি মরেও যায়, সেটা কোনও বড় বিষয় নয়। কারণ ৪১টি জীবনের উপর আরও অনেকগুলি জীবন নির্ভর করে আছে।”
শাবল-গাঁইতি দিয়ে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে কত বড় কাজ করছিলেন, জানতেন মুন্নারা। তাই কাজ শেষ হওয়া মাত্র প্রত্যেকের চোখে জল এসে গিয়েছিল। তবে মঙ্গলবার গোটা দেশ তাঁদের কাজের দিকে তাকিয়ে থাকলেও এই কাজের কথা সন্তানদের বলতে পারবেন না মুন্না। কেন? সাফ জানান, অন্য বাবা-মায়েদের মতো তিনিও চান, সন্তানরা চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হোক। “আমি চাই না ওরা বড় হয়ে আমার পেশায় আসুক।” বলেন উত্তরকাশীর উদ্ধার অভিযানের অন্যতম নায়ক।
উল্লেখ্য, মার্কিন অগার মেশিন ভাঙার পরেই ‘ইঁদুর-গর্ত’ খোঁড়ার জন্য ডাক পড়েছিল ১২ জন খনিশ্রমিকের। তাঁরা ১০ মিটার ধ্বংসস্তূপ খোঁড়েন একটানা ২৬ ঘণ্টার পরিশ্রমে। এক ডজন মানুষের পরিশ্রমে সুড়ঙ্গবন্দি ৪১ জন মানুষের প্রাণ বাঁচল এযাত্রায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.