সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পোকার ‘পটি’তে কালিমালিপ্ত তাজমহলের শ্বেতপাথর। সমাধানে যমুনায় স্রোত তোলার দাওয়াই দিচ্ছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)।
শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার তাজমহলে আরতি করার হুমকি দিয়েছিলেন শিব সেনার সদস্যরা। ধর্মীয় সেই অনুপ্রবেশ রুখতে বাড়তি সুরক্ষার ব্যবস্থা করে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু সপ্তদশ শতকের এই সৌধ এবার পোকার আগ্রাসনে বিপন্ন। যা ঠেকাতে বড়রকম সমস্যার মুখোমুখি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের আগ্রা শাখা।
সাদা মার্বেলের উপর মিনা ও জাফরির শিল্পকর্ম তাজমহলকে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই শ্বেতপাথরের উপরই কালো-সবুজ ছোপ পড়েছে। যা বিশেষ এক প্রজাতির পোকার বিষ্ঠা বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞ প্রত্নতাত্ত্বিকরা। আপাতত এই সমস্যাই তাঁদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। প্রতি শুক্রবার তাজমহলে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকে। আর সেই দিনই চলছে তাজের দেওয়াল পরিষ্কারের কাজ। ব্রাশ দিয়ে ঘষে পোকার বিষ্ঠা তুলে ‘ডিস্টিলড ওয়াটার’-এ তা ধোয়া হচ্ছে।
এএসআই আগ্রা শাখার সুপার বসন্ত স্বরঙ্কর জানান, যমুনার জমা জলে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে গোয়েল্ডিচিরোনোমাস প্রজাতির এই পোকা। তারপরেই ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে তাজমহলের দিকে। শৌচকমের্র জন্য বেছে নেয় সাদা মার্বেলের এই সৌধকে। এর ফলে বড়সড় ক্ষতির মুখে শাহজাহানের তৈরি এই স্মৃতিসৌধ। তাজমহল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হচ্ছে, এমনিতেই শ্বেতপাথর রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন কাজ। যে কোনও জলে শ্বেতপাথরের এই সৌধ ধোয়া নিরাপদ নয়। তাই সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিশুদ্ধ জল। তবে নিয়মিত ঘষাঘষিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাজের শ্বেতপাথর। তাই এর স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।
এর আগে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে ছারপোকার আক্রমণে জেরবার হতে হত এই শিল্পকর্মকে। কিন্তু বর্তমানে গোয়েল্ডিচিরোনোমাস প্রজাতির এই পোকার আগ্রাসন নিয়মিত সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর স্থায়ী সমাধানে অবিলম্বে যমুনা সংস্কারের দাবি করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এএসআইএর বিজ্ঞান শাখার তরফে দাবি করা হয়েছে, যেদিন থেকে যমুনার জল কমে যাওয়ার কারণে বহমানতা থেমে গিয়েছে সেদিন থেকেই শাহজাহানের প্রিয় এই নদী হয়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গের আঁতুড়ঘর। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অবিলম্বে যমুনার সংস্কার প্রয়োজন। নদীর বহমানতা স্বাভাবিক হলে জলের স্রোতে ছোট ছোট মাছ বাস করবে। যারা এই সব পোকার লার্ভা খেয়ে জীববৈচিত্র বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.