সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারমাণবিক সাবমেরিন ‘আইএনএস অরিহন্ত’ থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। শুক্রবার বঙ্গোপসাগরে এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয় বলে খবর। এর ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত।
এক বিবৃতি জারি করে প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, “আইএনএস অরিহন্ত থেকে সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। অত্যন্ত সফলভাবে এই পরীক্ষা সফল হয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত শর্ত ও প্যারামিটারের সবগুলিই পূরণ হয়েছে। পরমাণু হামলা সংক্রান্ত ভারতের প্রথম হামলা না করার নীতি মেনেই দেশের প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।”
এই মুহূর্তে ভারতের হাতে আছে তিনটি পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন ‘আইএনএস অরিহন্ত‘ (INS Arihant)। বলে রাখা ভাল, স্থল ও আকাশে আগেই ভারত পরমাণু অস্ত্রে প্রত্যাঘাতে সফল ছিল এবার জলভাগেও পারমাণবিক অস্ত্র হামলার প্রত্যুত্তর দিতে প্রস্তুত ভারত। আইএনএস অরিহন্ত ভারতের প্রথম পারমাণবিক সাবমেরিন। ১৯৭১-এ ভারত-পাক যুদ্ধের পরই জলপথে পারমাণবিক সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল ভারত। প্রক্রিয়া শুরু হয় তখনই। অবশেষে ২০১৬ সালে শেষের দিকে প্রথম সেনার হাতে আসে। কিন্তু তখনও অনেকরকমের পরীক্ষানীরিক্ষা বাকি ছিল।
উল্লেখ্য , স্থল এবং আকাশ থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা আগেই ছিল ভারতের। শুধু সমুদ্রগর্ভ থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা ভারতের ছিল না। প্রকৃত পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের কাছে এই তিন সক্ষমতা থাকাই জরুরি। কারণ আধুনিক যুদ্ধের কৌশল বলছে, একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের উপর অন্য একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র যদি পরমাণু হামলা চালায়, তা হলে এমন ভাবে হামলা চালানো হবে যাতে প্রতিপক্ষের ভূখণ্ডে যত পারমাণবিক পরিকাঠামো রয়েছে, সেগুলির সব ক’টিকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। সেই কারণেই ‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি’ বা পরমাণু হামলা চালানোর বিকল্প পরিকাঠামো হাতে থাকা জরুরি।
স্থলভাগে যে সব পরমাণু পরিকাঠামো রয়েছে, সেগুলিতে প্রতিপক্ষ হামলা চালাতে সক্ষম হলেও সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা পরমাণু অস্ত্রের ক্ষতি করা সম্ভব হয় না। কারণ পরমাণু অস্ত্র নিয়ে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন কোথায় কখন লুকিয়ে থাকে, তা প্রতিপক্ষ বুঝতেই পারে না। আইএনএস অরিহন্ত সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত হয়ে যাওয়ায় ভারত সমুদ্রের গভীরে পরমাণু অস্ত্র এবং মিসাইল মজুত করার সামর্থ্য পেয়ে গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.