সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুরুত্বপূর্ণ কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের মুখে অস্বস্তি বাড়ল কেন্দ্র সরকার ও কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির (BJP)। সদ্য শেষ হওয়া মার্চে দেশে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। যা গত তিনমাসের মধ্যে সর্বাধিক। একদিকে, কেন্দ্রের মোদি সরকার যখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ‘অন্য দেশগুলির থেকে ভাল’ বলে নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়াচ্ছে, সেই সময়ই এই তথ্য সামনে এল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে মার্চের পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) আদায়ের তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, আগের মাসের তুলনায় জিএসটি আদায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্র এই তথ্য প্রকাশ করে কার্যত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি করলেও, বেকারত্বের পরিসংখ্যানের সঙ্গে তার কোনও সামঞ্জস্য নেই।
শনিবার সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)-র তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গতবছর ডিসেম্বরে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩ শতাংশ। এরপর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ৭.১৪ শতাংশ ও ৭.৪৫ শতাংশ। তবে মার্চে তা আরও বেড়ে হয়েছে ৭.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে এটাই সর্বাধিক। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সদ্য শেষ হওয়া মার্চে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৪ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকায় ছিল ৭.৫ শতাংশ। সিএমআইই-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মহেশ ব্যাস সংবাদসংস্থাকে জানান, ২০২৩ সালের মার্চে ভারতের শ্রম বাজারের অবনমন ঘটেছে। বেকারত্বের হার ফেব্রুয়ারিতে ৭.৫ শতাংশ থেকে মার্চ মাসে ৭.৮ শতাংশে ঠেকেছে। এর প্রভাব শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের হারে একযোগে পতনের ফলে জটিল হয়েছে, যা ৩৯.৯ শতাংশ থেকে ৩৯.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। যে কারণে কাজের হার ফেব্রুয়ারিতে ৩৬.৯ শতাংশ থেকে মার্চে ৩৬.৭ শতাংশ হয়েছে। সংখ্যার দিক দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে ৪০৯.৯ মিলিয়ন থেকে ফেব্রুয়ারিতে ৪০৭.৬ মিলিয়নে নেমে এসেছে।
সবচেয়ে বেশি কর্মহীনের হার থাকা রাজ্যগুলি হল হরিয়ানা (২৬.৮ শতাংশ), রাজস্থান (২৬.৪ শতাংশ), জম্মু ও কাশ্মীর (২৩.১ শতাংশ), সিকিম (২০.৭ শতাংশ), বিহার (১৭.৬ শতাংশ) এবং ঝাড়খণ্ড (১৭.৫ শতাংশ)। এদিকে, জিএসটি বাবদ মার্চে রেকর্ড পরিমাণ টাকা জমা পড়ল কেন্দ্রের কোষাগারে। ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষের শেষ মাসে জিএসটি বাবদ আদায় হয়েছে এক লক্ষ ৬০ হাজার ১১২ কোটি টাকা।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আয় হয়েছিল এক লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির তুলনায় আয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ। মার্চ মাসে জিএসটি আদায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত বছরের এপ্রিলে জিএসটি বাবদ আয় হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সেটাই পণ্য ও পরিষেবা কর বাবদ আদায়ে সর্বকালীন রেকর্ড। অর্থমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত জিএসটি বাবদ আয় হয়েছে ১৮ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ গড়ে মাসে দেড় লক্ষ কোটি টাকার বেশি সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.