সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বাস না করার মতোই সত্যি৷ ব্রিটিশ আমলে ইংরেজদের বিভিন্ন দফতরের সামনে লেখা থাকত, কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ৷ পাত্তারি গুটিয়ে ইংরেজ ফিরে গিয়েছে৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৬৮ বছর পরও দেশের অনেক জায়গায় ছবিটা পাল্টায়নি৷ নিজের দেশেই এখনও পরাধীন ভারতীয়রা৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন বেশ কিছু জায়গা আছে, যেখানে আজও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ৷ ভাবতে অবাক লাগলেও ভারতীয়রা সত্যিটার সঙ্গে যেন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন৷
উনো ইন হোটেল
বেঙ্গালুরুর এই হোটেলটির বয়স মাত্র চার বছর৷ শহরে বাড়তে থাকা কর্পোরেট জাপানিদের জন্য এই হোটেলটি বানায় নিপ্পোন ইনফ্রাস্ট্রাকচর কোম্পানি৷ সে না হয় হল৷ তবে জাপানিদের জন্য তৈরি রেস্তোরাঁতে ভারতীয়রা ঢুকতেই পারবেন না, এদেশের বুকে এমন নিয়ম মেনে নেওয়া বেশ কঠিন৷ ২০১৪ সালে একাধিক কারণের জন্য হোটেলটি খবরের শিরোনামে আসে৷ শোনা যায়, রুফ-টপ রেস্তোরাঁটিতে ভারতীয়রা ঢুকতে গেলে জোর করে বাধা দেওয়া হয়৷ ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে গ্রেটার বেঙ্গালুরু সিটি কর্পোরেশন পরে হোটেলটি বন্ধ করে দেয়৷
ফ্রি কাসোল কাফে
হিমাচল প্রদেশে পাহাড়ের কোলে ছোট্ট গ্রাম কাসোল৷ প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের পছন্দের স্থান এটি৷ কিন্তু এখানে কোনও ভারতীয় ঘুরতে গেলেও তাঁকে মাথায় রাখতে হবে যে স্বাধীন দেশেও সব স্থানে যেতে পারবেন না তিনি৷ এই যেমন ফ্রি কাসোল কাফেতে৷ বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে কফি খেয়ে সময় কাটাতে চাইলে ভুল করেও এই কাফেতে ঢুকবেন না৷ কপালে জুটবে অপমান৷ কারণ পাসপোর্ট ও গায়ের রঙ দেখে এখানে ক্রেতাদের আপ্যায়ন করা হয়৷
গোয়ার সমুদ্রসৈকত
গোয়ার একাধিক সমুদ্রসৈকতে ভারতীয়দের ঘোরাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ সৈকতে কুটিরের মালিকদের যুক্তি, বিদেশিরা যেসব পোশাক পরে সৈকতে আসেন, তা ভারতীয়রা খোলা মনে নাও মেনে নিতে পারেন৷ ভারতীয়দের বলিষ্ঠ দৃষ্টিতে বিদেশিরা অস্বস্তিতে পড়তে পারেন৷ সেই কারণেই সেসব স্থানে ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ৷
চেন্নাইয়ের একটি লজ
একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে প্রথম চেন্নাইয়ের লজটির কথা প্রকাশ্যে এসেছিল৷ লজটির নাম উহ্য রেখেই জানানো হয়েছিল, এখানে ভারতীয়দের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ ঠিক কী কারণে এই বাধা-নিষেধ তা স্পষ্ট নয়৷ পাসপোর্ট অনুযায়ী আপনি এদেশি না হলে তবেই লজে থাকার অনুমতি পাবেন৷
পুদুচেরির সমুদ্রসৈকত
গোয়ার মতো দক্ষিণ ভারতের এই শহরের সমুদ্রসৈকতেও বর্ণবিদ্বেষমূলক মনোভাব চোখে পড়ে৷ একাধিক সৈকতের প্রবেশ পথে বড়বড় করে লেখা না থাকলেও, এখন সকলেই জেনে গিয়েছেন সেসব সৈকত শুধুমাত্র বিদেশিদের জন্যই বরাদ্দ৷
এসব দেখে একটা প্রশ্ন মনে আসতেই পারে, নিজের দেশেই বর্ণবিদ্বেষী তকমা! ভারতীয়রা কি চুপচাপ মেনে নেবেন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.