সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুলেট ট্রেন। নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের প্রকল্প। আগামী ২০২৩ সালে মুম্বই-আমেদাবাদ রুটে পথ চলা শুরু করবে জাপানি প্রযুক্তির এই দ্রুতগতির ট্রেন। কিন্তু কেন এই রুটেই শুরুয়াত? সেই প্রশ্ন ওঠে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে নেটদুনিয়ায়। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার সুপ্রিমো রাজ ঠাকরে এই সিদ্ধান্তকে হাস্যকর বলে ব্যাখ্যা করেন। অন্যান্য দলগুলিও এই রুটের বিরোধিতায় সরব হয়। সবারই যুক্তি, আরও দীর্ঘ কোনও রুটে শুরু করা যেতে পারে এই প্রকল্প। মুম্বই-আমেদাবাদ রুট একে স্বল্পদৈর্ঘর উপরন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি রাজ ঠাকরের। তবে বিরোধীদের কথা যে খুব ভুল নয় তার প্রমাণ মিলেছে ভারতীয় রেলওয়ের রিপোর্টেই। সম্প্রতি জনৈক অনিল গালগালির একটি RTI-এর জবাবে জানা গিয়েছে, গত জুলাই থেকে এই রুটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেল। তারপরেও কেন এই রুটেই চলবে বুলেট ট্রেন, প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে।
জানা গিয়েছে, এই রুটে যাত্রীরা স্লিপার শ্রেণিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির টিকিট অবিক্রিতই থেকে যাচ্ছে। গত তিন মাসে ৬০ শতাংশ যাত্রী নিয়েই এই রুটে ছুটছে সুপারফাস্ট ট্রেনগুলি। ৪০ শতাংশ আসন খালিই থাকছে। এই রুটে জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে রেলের, জানিয়েছেন এক শীর্ষ রেল আধিকারিক। বর্তমানে কোনও নতুন ট্রেন এই রুটে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। এই রুটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেন শতাব্দী এক্সপ্রেসেরও মাত্র অর্ধেক টিকিটই বিক্রি শেষ তিন মাসে। এর ফলে মুম্বই থেকে আমেদাবাদের মধ্যে ৫০০ কিমি দূরত্ব ৮ ঘন্টার বদলে ৩ ঘন্টায় অতিক্রম করা জাপানিজ প্রযুক্তির বুলেট ট্রেনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেরই দাবি, যখন সুপারফাস্ট ট্রেনগুলিতেই যাত্রী হচ্ছে না তখন গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে বুলেট ট্রেনে চড়ার জন্য যাত্রী খুঁজে পাওয়া যাবে না। আদৌ এই প্রকল্প কতটা সফল হবে তা তো সময়ই বলবে, কিন্তু ভারতীয় অর্থনীতির ভার অনেকটাই যার উপর নির্ভরশীল, সেই রেলওয়ের ক্ষতির বহর আরও বৃদ্ধি না করাটাই সমীচিন বলে যুক্তি ওয়াকিবহাল মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.