প্রতীকী চিত্র
স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: আরও একবার ফাঁস নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘জুমলা’। আরও একবার সামনে এল ‘আচ্ছে দিন’-এর আসল চেহারা। আরও একবার মুখ পুড়ল ভারতীয় রেলের।
গাঁটের কড়ি খসিয়েও প্রায় রোজ চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয় ভারতীয় রেলের লাখ লাখ যাত্রীকে। আইআরসিটিসি-র নিম্নমানের খাবার। বেঁধে দেওয়া দামের থেকে বেশি মূল্য চোকানো তো আছেই। রেলযাত্রীদের কাছে বিভীষিকার মতো উপস্থিত হয় বাথরুম। জেনারেল, স্লিপারের শৌচাগারের হাল তো কহতব্যের মধ্যেই থাকে না। থ্রি এসি, কখনও আবার টু এসি কামরার বাথরুমের হালও থাকে পাবলিক টয়লেটের থেকেও নোংরা। তেমনই এক ঘটনার জন্য এবার জরিমানার মুখে পড়তে হল অশ্বিনী বৈষ্ণোর মন্ত্রককে। দিল্লির ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন এক যাত্রীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল রেলকে (Indian Railways)। সঙ্গে আইনি লড়াই চালানোর খরচ হিসাবে আরও ১০ হাজার। এক মাসের মধ্যে এই টাকা সংশ্লিষ্ট যাত্রীর অ্যাকাউন্টে না পৌঁছলে রেলকে বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে, এই নির্দেশও দিয়েছে ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন।
ঘটনার উৎস জানতে পিছিয়ে যেতে প্রায় আড়াই বছর। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর থ্রি এসি কামরায় নয়াদিল্লি থেকে ইন্দোর রওনা দেন এক ব্যক্তি। পরদিন, অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা নাগাদ নিত্যকর্ম করতে তিনি শৌচাগার যান। গিয়ে দেখেন বাথরুম নোংরা। নেই এক ফোঁটা জল। বেসিন জলে টইটম্বুর। কামরায় কোনও অ্যাটেনডেন্ট দেখতে না পেয়ে সকাল আটটা ২২ নাগাদ ভারতীয় রেলের অনলাইন পোর্টাল ‘রেল মদত’ এবং ভারতীয় রেল, রেলসেবা, রেলমন্ত্রক (Rail Ministry), রেলমন্ত্রী-সহ বিভিন্ন হ্যান্ডেলে টুইটও করেন।
সকাল ১০টায় ইন্দোর পৌঁছয় তাঁর ট্রেন। অথচ তখনও বাথরুমের হাল ছিল একইরকম। প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষার পরও বাথরুম ব্যবহার করতে না পেরে ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের দ্বারস্থ হন তিনি। অভিযোগ করেন এর ফলে অসম্ভব শারীরিক কষ্ট হয়েছে। শরীর এতখানিই খারাপ হয়ে যায় যে, তিনি কাজে পর্যন্ত যেতে পারেননি। অভিযোগ অস্বীকার করে কমিশনে রেল জানায়, ২০১৯ সালের ক্রেতা সুরক্ষা আইন মোতাবেক, শৌচাগারের সুবিধার কথা পরিষেবায় উল্লেখ নেই। যদিও উত্তর দিল্লি জেলার এক নম্বর কমিশনে দিব্যা জ্যোতি জয়পুরিয়ারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ জানায় জল ও শৌচাগার- ন্যূনতম পরিষেবার আওতায় পড়ে। যাত্রীদের এই পরিষেবা দিতে রেল অস্বীকার করতে পারে না।
দিল্লির ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের এই রায় যুগান্তকারী হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। নিত্যদিন একই ধরনের সমস্যায় ভুগতে হয় কয়েক লক্ষ যাত্রীকে। এই নির্দেশকে হাতিয়ার করে তারাও যদি এবার আইনের দ্বারস্থ হয়, সেক্ষেত্রে সর্বনাশের মুখোমুখি হতে পারে ভারতীয় রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.