সুব্রত বিশ্বাস: ‘লাভ’ অ্যান্ড ‘সেক্স’ লেখা কোনও জিনিসই এবার ভারতীয় রেলের স্টেশনগুলিতে থাকবে না। এই দুই কথা লেখা থাকার ‘অপরাধে’ ভোপাল স্টেশন থেকে বাজেয়াপ্ত করা হল প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক খুশবন্ত সিংয়ের লেখা বই ‘অন উইমেন, সেক্স, লাভ অ্যান্ড লাস্ট’। প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটি স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা খতিয়ে দেখার সময় স্টেশনের বুক স্টলে বইটি দেখে তা বাজেয়াপ্ত করে। আকস্মিকভাবে ভোপাল ডিভিশনের বিভিন্ন স্টেশনের থেকে বইটি সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, বইটিকে কমিটি ‘আপত্তিকর’ বলে জানিয়েছে।
এই নির্দেশ সম্পর্কে কমিটি জানিয়েছে, বইটি পড়ে যুবসমাজ ‘বিগড়ে’ যেতে পারে। পাশাপাশি সুপারিশে বলা হয়েছে, স্টেশনে পরিবারের সকলে একসঙ্গে যাতায়াত করেন। ‘লাভ’ ও ‘সেক্স’ শব্দগুলিতে তাঁরা অস্বস্তির মধ্যে পড়তে পারেন। ফলে এই ধরনের বই স্টেশনের স্টলে রাখা চলবে না। বাংলা ভাষাবিদ পবিত্র সরকার এই সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বলে জানিয়ে বলেন, অপরিণতমনস্কতার লক্ষণ। জাতি হিসাবে এখন অপরিণতর পরিচয়। এটা হতে পারে না। কবি সুবোধ সরকার বলেন, শুনেই হাসি পেল। ‘লাভ’ ও ‘সেক্স’ লেখা থাকার অর্থ যৌনতার বই নয়। এটা সাহিত্য। সেক্সোলজির উপর বই থাকলে তাও তুলে নেবে? বাৎস্যায়নের বইও তো বিক্রি হয় স্টেশনে। খুশবন্ত সিং একজন নামী সাংবাদিক, সাহিত্যিক, সাহিত্য অ্যাকাডেমি পেয়েছেন। তাঁর বই না পড়েই এই সিদ্ধান্ত হাস্যকর।
প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটির চেয়ারম্যান রমেশচন্দ্র রতন বলেন, “ভোপাল স্টেশনে এই বই ধরা পড়েছে। এবার দেখতে হবে তা আরও অন্য কোথাও বিক্রি হচ্ছে কি না। দেশজুড়ে বিভিন্ন স্টেশনে এমন অশ্লীল বইয়ের খোঁজ চলছে।” তিনি আরও বলেন, “দিল্লির কাছে একটি স্টেশনে ও রুরকি স্টেশন থেকে এই বইটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনে দিল্লির আশপাশের স্টেশনগুলিতে কমিটি এই বইয়ের সন্ধান চালাবে ও বাজেয়াপ্ত করবে।” প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটি স্টেশন ও ট্রেনে যাত্রীদের কেমন সার্ভিস দিচ্ছে, রেল তা খতিয়ে দেখে সুপারিশ করে থাকে। জল, বাথরুম, খাবার ইত্যাদি দেখে থাকে কমিটি। এবার কী বই পড়বেন যাত্রীরা তা-ও ঠিক করে দেবে কমিটি? এমন প্রশ্ন তুললেন যাত্রীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.