সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তড়িঘড়ি নয়া হাসপাতাল ও পরিকাঠামো তৈরিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার ব্যস্ত থাকলেও স্থানসংকুলানই হল সেখানে বড় সমস্যা। তাই লকডাউন পরিস্থিতিতে ট্রেনের কামরাকেই এবার ব্যবহার করা হচ্ছে আইসোলেশনে ওয়ার্ড হিসেবে। ট্রেনের বগিকে আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসিইউ কেবিন বানিয়ে গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার কথা আগেই ভেবেছিল মোদি সরকার। এবার সেই ভাবনাকেই বাস্তবে রূপ দিতে ট্রেনের কোচে তৈরিও হয়ে গিয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড।
আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন, লকডাউন এই তিনটি শব্দ এখন চলতি মুশকিল আসানের নয়া ‘হামসফর’। দেশে একদিকে যখন বন্ধ সমস্ত গণপরিবহন তখন অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থাকা ট্রেনকেও কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করে রেলমন্ত্রক। করোনা আক্রান্তদের বিভিন্ন হাসপাতালে রাখা হলেও যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে কয়েকদিনের মধ্যেই স্থানাভাব দেখা দিতে পারে। আর গ্রামীণ হাসপাতালে রাতারাতি পরিকাঠামো গড়ে তোলা মুখের কথা নয়। তাই যেমন ভাবা তেমন কাজ। পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেনের বগিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির পাশাপাশি চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ব্যবস্থাও করতে চায় রেল। এই ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিম রেল। ইতিমধ্যেই কোন জোনের কোন স্টেশনে আইসোলেশন কোচ রাখা হবে তাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে খবর। প্রয়োজনে শহর থেকে দূর এলাকাতেও এই সব কোচ পাঠানো যাবে।
রেলের যে সব প্যান্ট্রি কার রয়েছে সেগুলিকে মোবাইল কিচেন বানানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে। ওই সব প্যান্ট্রি কারে যাঁরা কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন তাদের খাবারের ব্যবস্থা করবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যও খাবার সরবরাহ করবে প্যান্ট্রি কার। বিভিন্ন স্টেশনে থাকা আইসোলেশন কোচে খাবার পাঠানো হবে মোবাইল কিচেনের মাধ্যমে। এখনও পর্যন্ত যা ভাবা হয়েছে, তাতে ট্রেনের একটি কোচে দশজন করে থাকতে পারবে। প্রতিটি লবিতে ছ’টি করে বার্থ থাকে। এই এক একটি লবি হবে একটি করে থাকার জায়গা। এই হিসেবে একটি কোচে দশজন আইসোলেশনে থাকতে পারবেন। এখনও পর্যন্ত যা পরিকল্পনা তাতে ২০ হাজার কোচকে এই ভাবে কোয়ারেন্টাইন হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে।
ট্রেনের এই আইসোলেশন সেন্টারগুলিতে ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থাও করার চেষ্টা চালাচ্ছে রেলমন্ত্রক। পাশাপাশি তারা মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোও শুরু করে দিয়েছে। ট্রেনের প্রতিটি বগির টয়লেটগুলিকে এককরে একটি বাথরুমও বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাতে আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তির কোনও অসুবিধা না হয়। বগির মাঝের বার্থগুলিকেও বাদ দিয়ে দেওয়া পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রতিটি বগির লবিতে ২২০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও করবে রেলমন্ত্রক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.