ছবি: প্রতীকী
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: টানা তিনদিন ভারতের (India) আকাশে দেখা গিয়েছে শত্রু ড্রোন (Drone)। নতুন করে দেখা দেওয়া এই সমস্যা মেটানোর কি উপায় নেই ভারতের কাছে? এই ধরনের প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে উত্তরের পাহাড় থেকে দক্ষিণের সমুদ্রে। একটু খোঁজখবর করে যে উত্তর মিলল, তাতে দেশবাসী স্বস্তি ও অস্বস্তি — দুইই পেতে পারেন।
কানের পাশে ভনভন করতে থাকা অযাচিত মাছিদের মতো সীমান্তের ওপার থেকে আসা ড্রোন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমানের মতো অস্ত্র ভোঁতা করার মতো হাতিয়ার মজুত রয়েছে ভারতীয় সেনার অস্ত্রাগারে। ‘স্পাইডার’ নামক ইজরায়েলি মিসাইল, যা নিজেদের আকাশ সীমান্তে কোনও অপরিচিত বস্তুর হদিশ পেলেই এক নিমেষে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু সমস্যা হল, নিজেদের বায়ুসীমায় থাকা ড্রোন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান বা এই ধরনের অন্য কোনও বস্তু, তা শত্রুপক্ষের না নিজেদের তা বুঝে ওঠার ক্ষমতা পুরোপুরি নেই স্পাইডারের।
২০১৯ সালে যেদিন পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারী যুদ্ধবিমানদের তাড়া করে ধ্বংস করার পথে শত্রু সীমানায় ভেঙে পড়ে উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের বিমান, সেদিনই শ্রীনগর থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে ভেঙে পড়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার এমআই১৭ভিএফ হেলিকপ্টার। প্রাথমিকভাবে রটে যায়, পাক হানায় ধ্বংস হয়েছে এই হেলিকপ্টার। কিন্তু বায়ুসেনার কোর্ট অব এনকোয়ারি-তে দেখা যায়, তা ধ্বংস হয়েছে নিজেদেরই স্পাইডার মিসাইলের জন্য। নিজের এলাকায় উড়ন্ত বস্তুর সন্ধান পেয়ে তাকে ধ্বংস করে দেয় স্পাইডার। এই ঘটনায় শহিদ হন ছ’জন জওয়ান। অনুসন্ধানের পর কর্তব্যরত পাঁচ জওয়ানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এছাড়া ভারতীয় প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোয় তৈরি ‘আকাশ’ নামক মিসাইলও ভারতীয় সেনার কাছে মজুত আছে। কিন্তু সেটিও নিজের ও শত্রুর উড়ন্ত বস্তুর মধ্যে পার্থক্য করতে খুব একটা সক্ষম নয়। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথ খুঁজতে জোর দেওয়া হচ্ছে বলেই খবর। এছাড়া এই ধরনের আরও দুই ধরনের প্রযুক্তি তৈরি করেছে ডিআরডিও। যদিও এর ব্যাপকভাবে পরীক্ষা হয়ে ওঠেনি।
একদিকে যখন শত্রুদেশের ড্রোন হামলা মোকাবিলা করার পথ খোঁজা হচ্ছে, সেই সময় এদিনও ভারতীয় বায়ুভাগে দেখা গেল অজ্ঞাতপরিচয় ড্রোন। জম্মুর সুঞ্জওয়ান মিলিটারি ক্যাম্পের কাছে রাত আড়াইটে নাগাদ কুঞ্জওয়ানি, সুঞ্জওয়ান ও কালুচক এলাকায় কিছুক্ষণের জন্য একটি ড্রোনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই তা নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। রবিবার বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ড্রোন আক্রমণের প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টও এর মধ্যে চলে এসেছে। কোন পথে ড্রোনগুলি ভারতে এসেছিল, তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও মনে করা হচ্ছে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা রয়েছে এর পিছনে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং এদিন এই তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়াও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি চিনের থেকে বেশি পরিমাণে ড্রোন কিনেছে পাকিস্তান। সরকারিভাবে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পিজা ও ওষুধ সরবরাহ করতে সেগুলি কেনা হয়েছে। রবিবার ভারতীয় বায়ুসেনা ঘাঁটিতে যে ড্রোনগুলির সাহায্যে আক্রমণ করা হয়েছিল, সেই ড্রোন আর চিন থেকে কেনা ড্রোন একই কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.